বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের আয়োজনে ৮ মে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এআই সামিট। আকিজ রিসোর্স ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিতব্য এই সামিটটি বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের একটি ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ।
এই আয়োজনটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ, টেক ও এআই বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও উদ্ভাবকদের একত্রিত করবে। বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা, উদ্ভাবন এবং এআই প্রযুক্তির জোরালো সম্ভাবনা নিয়ে পারস্পরিক ও এককভাবে আলোচনা করবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা, এবং বাংলাদেশে এআই ট্যালেন্ট তৈরির একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলার সম্ভাব্য সুযোগ নিয়েও এই সামিটে আলোচনা হবে।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে এআই-এর সম্ভাবনা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি, সরকারি-বেসরকারি-একাডেমিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা, দক্ষ পেশাজীবীদের একটি বৃহৎ পুল তৈরি, এবং একটি জাতীয় এআই নীতি গঠনে কার্যকরী দিকনির্দেশনা প্রদান করা।
আসন্ন সামিটটি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম এবং বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফুল ইসলাম বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের চারপাশের বিশ্বকে প্রতিনয়ত বদলে দিচ্ছে। এই পরিবর্তনের অংশ হতে হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশাসন, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প প্রতিটি খাতে এআই যথাযথ ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। এই সামিটের মাধ্যমে আমরা জানার চেষ্টা করবো কিভাবে এআই আমাদের শিল্পকে রূপান্তর করতে পারে, প্রশাসনে দক্ষতা আনতে পারে, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করতে পারে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, নৈতিক সমাজ গড়ে তুলতে পারে। একইভাবে আমরা এআই হ্যাকাথনের সূচনা করেছি, যা দেশের মেধাবী তরুণদের জন্য উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপনের একটি প্ল্যাটফর্ম ।
আয়োজনটির প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, এমসিআইপিএস (সিএস), সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি, টিই, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)।
সামিটে ৪টি কি-নোট সেশন, ২টি প্যানেল আলোচনা, ৫টি ইনসাইট সেশন, ২টি কেস স্টাডি এবং ১টি ফায়ারসাইড চ্যাট অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি ৫টি ব্রেকআউট সেশনে বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, ফিনটেক ও শিল্পখাতে এআই অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক আলোচনা করবেন।
সামিটের বিভিন্ন আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বাংলাদেশে এআই-এর ভবিষ্যৎ, বৈশ্বিক এআই প্রবাহ এবং এর প্রভাব, স্বাস্থ্য খাতে এআই-এর সম্ভাবনা এবং সমাজে এর সমান সুযোগ তৈরি করার ক্ষেত্র নিয়ে। এছাড়াও নৈতিক নীতিমালার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে এআই-এর ভূমিকা এবং আর্থিক সেবায় অধিকতর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক আলোচনাও সামিটের বিভিন্ন সেশনে গুরুত্ব পাবে।
এই সামিটে একই সাথে বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের আরেকটি যুগান্তকারী উদ্যোগ এআই হ্যাকাথনের বিজয়ীদের সম্মাননাও প্রদান করা হবে। সিটি ম্যানেজমেন্ট, ম্যানুফ্যাকচারিং, এডুকেশন, এগ্রিকালচার, ফিনটেক এবং হেলথকেয়ার, এই ৬টি খাতে ৬টি উদ্ভাবনী এআই সমাধানকে এই সম্মাননাটি প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশে নগর এবং খাতভিত্তিক সমস্যাগুলোর সমাধানে এআই-চালিত প্রযুক্তি তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে ১০ মার্চ, ২০২৫ এআই হ্যাকাথনের যাত্রা শুরু হয় । এই প্রতিযোগিতায় ৭০টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৭৭টি দল অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে থেকে ৩১টি টিমকে ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে শর্টলিস্ট করা হয়। এই টিমগুলো ১৭ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত তাদের প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করে। আগামী ৬ ও ৭ মে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিতব্য দুই দিনের বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদের থেকে মেন্টরশিপ গ্রহণ করবে এবং চূড়ান্ত প্রদর্শনীতে তাদের সমাধান উপস্থাপন করবে। অভিজ্ঞ জুরি বোর্ডের কঠোর মূল্যায়নের মাধ্যমে বিজয়ী দলগুলো নির্বাচন করা হবে। ৬টি খাতের প্রতিটির বিজয়ী দলকে ১ লক্ষ টাকার সম্মাননা প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ এআই সামিট এবং এআই হ্যাকাথন আকিজ রিসোর্স ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আয়োজনটির স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট, রিভ চ্যাট, ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানী বাংলাদেশ পিলসি; মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ন্যামকন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভারটাইজিং অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ। অফিসিয়াল ক্যারিয়ার পার্টনার টার্কিস এয়ারলাইনস। রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার প্রাণ এবং পিআর পার্টনার ব্যাকপেজ পিআর। সামিট ও হ্যাকাথন দুইটি বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ।
এমআর/টিএ