‘জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত হলে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা সম্ভব’

বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে দি ইন্সটিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টস (আইটিইটি) আয়োজিত এক প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উঠে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব এনায়েত হোসেন, আহ্বায়ক এহসানুল করিম কায়সার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশজ রপ্তানির ৮৪ শতাংশ রপ্তানি করে থাকে শুধুমাত্র তৈরি পোশাক খাত। আর তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করেই ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড শিল্পের ব্যাপক বিনিয়োগ হয়েছে। গত ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে একদিকে শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং অনিয়মিতভাবে গ্যাসের সরবরাহ, অন্যদিকে ২০২৩ সালে হঠাৎ করে গ্যাসের মূল্য ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এর ফলে টেক্সটাইল শিল্প কারখানাগুলোকে চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৩৮.৪৮ বিলিয়ন ডলার তৈরি পোশাক রপ্তানি করবে। পর্যাপ্ত গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে বর্তমান কাঠামোর মধ্যেই ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি সম্ভব বলে আমরা মনে করি। বর্তমান সরকার বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কিন্তু গ্যাসের সরবরাহের নিশ্চয়তা না দিয়ে নতুন কারখানায় গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে পুরাতন/চলমান কারখানার চেয়ে গ্যাসের মূল্য ৩৩ শতাংশ বেশি নির্ধারণ করে নতুনদের শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনুৎসাহিত করা হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিকের বেতনবৃদ্ধি এবং অধিকতর মূল্যস্ফীতির কারণে ইতোমধ্যে ৫০০ ছোট-বড় কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় টেক্সটাইল খাতের বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। জনগণকে বেকার রেখে দিন বদল করা যাবে না। বেকারত্ব দূর করতে হলে প্রাইমারি ও তৈরি পোশাক শিল্পকে সচল ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকার উৎপাদনমুখী শিল্পে যে কোনো পরিমাণ বিনিয়োগে প্রশ্ন ব্যতীত অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করার সুযোগ প্রদান করেছিল। সে সময় তার সুফলও পাওয়া গিয়েছিল, প্রচুর পরিমাণে শিল্পে বিনিয়োগ হয়েছিল। এই সুবিধা প্রদান করার সুফল দেশ ও জনগণ পেয়েছে, উপরন্তু কালো টাকা শিল্পে বিনিয়োগের ফলে টাকা পাচারকে অনুৎসাহিত করা গেছে। আসন্ন বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

‘এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিতকরণ, ব্যাংক সুদের হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, ব্যাংকিং চার্জ কমানো, বন্দরের চার্জ হ্রাস, শ্রমিক অসন্তোষ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিল্প উৎপাদনে গতিশীলতা আনয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। বিগত কিছুদিন ধরে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্পে বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তা ও ক্রেতারা উদ্বিগ্ন। যে কোনো পরিস্থিতিতে শিল্পক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও অসন্তোষমুক্ত রাখতে সরকারের দৃষ্টি দিতে হবে।’

এফপি/এস এন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিনিয়োগে মন্দা, পাঁচ মাসে ৮ শতাংশের নিচে ঋণ প্রবৃদ্ধি May 08, 2025
img
ভারতশাসিত কাশ্মীরে ব্ল্যাকআউট, জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ May 08, 2025
img
দিনাজপুরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা May 08, 2025
img
চবির পঞ্চম সমাবর্তীদের অংশ নিতে মানতে হবে ১০ নির্দেশনা May 08, 2025
img
অভিনেতাকে আটক করতে শুটিং সেটে পুলিশ! May 08, 2025
img
আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা হাসনাতের May 08, 2025
img
করিডরের নামে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না : মির্জা ফখরুল May 08, 2025
img
যারা ৭১ এ গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে, তারা এখন গলা ফুলিয়ে কথা বলে: মির্জা ফখরুল May 08, 2025
আ.লীগের কারা বিএনপিতে যোগ দিতে পারবেন, জানালেন রিজভী May 08, 2025
img
চবির সবচেয়ে বড় সমাবর্তনে বাজেট ১৪ কোটি, বক্তা ড. ইউনূস May 08, 2025