দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপজেলা ভোলার মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৭ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলা-বরিশাল সেতু প্রকল্পের কাজ আগামী বছরের জানুয়ারিতে শুরু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মহিউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে ভোলা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সেতু বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
এর আগে সকালে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করেন ড. শেখ মহিউদ্দিন, সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভায় জানানো হয়, ভোলার শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প-বাণিজ্য এবং গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তকরণসহ সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কালাবদর ও তেঁতুলিয়া নদীর ওপর নির্মাণ করা হবে ১৬.৩৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেন বিশিষ্ট সেতু। যার মধ্যে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ১০.৮৭৬ কিলোমিটার এবং বাকি অংশ সংযোগ সড়ক ও নদী শাসনের আওতায় থাকবে ৫.৫ কিলোমিটার।
প্রকল্পটি শুরু হলে ২০৩৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থায়ন বিষয়ে জানানো হয়, জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে। তাদের সঙ্গে চুক্তি না হলে কোরিয়াকে বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। যদি বিদেশি কোনো উৎস থেকে অর্থ না আসে, তাহলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নেই সেতু নির্মাণ করা হবে।
মতবিনিময় সভায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ‘আমরা ভোলাবাসী’ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। তারা প্রস্তাবিত সেতুটি বহুমুখী সেতু হিসেবে নির্মাণের দাবিও তুলে ধরেন।
এ সময় সভাকক্ষের বাইরে বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলনে অংশ নেয় সাধারণ ছাত্র-জনতা। তারা তাদের পাঁচ দফা দাবির বিষয়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। সভা শেষে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ঢাকায় ফিরে বাকি দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন।
ভোলাবাসী বৃহস্পতিবারের ঘোষণাকে নতুন আশার আলো হিসেবে দেখছেন। তাদের বিশ্বাস, এই সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্বীপজেলা ভোলা অবশেষে যুক্ত হবে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে। দাবি আদায়ে গত কয়েকদিন ধরে জেলা শহরের বাংলা স্কুল মাঠে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন সাধারণ জনগণ।
এসএস