দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান থেকে ভারতের জম্মু বিমানবন্দর লক্ষ্য করে অন্তত আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ও তিনটি ড্রোন ছোড়া হয় বলে দাবি করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় অংশ, বিশেষ করে এস-৪০০ সিস্টেম, এসব হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, একটি ড্রোন জম্মু বিমানবন্দরে আঘাত হানে, তবে রাজস্থানের জয়সালমের ও পাঞ্জাবের পাঠানকোটে ছোড়া ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ধ্বংস করা হয়।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ‘কাইনেটিক’ ও ‘নন-কাইনেটিক’ সামরিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে লাহোরে পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। জম্মু, পাঠানকোট ও উদমপুরসহ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে বলেও জানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এছাড়া এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের সরগোধা বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নকারী একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে ভারতীয় বাহিনী গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এতে ব্যবহার করা হয় ভারতের উন্নত সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
সম্প্রতি ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা করে, যার ফলে অন্তত ১০০ সন্ত্রাসী নিহত হয় বলে দাবি করা হয় ভারতীয় সূত্রে।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব হামলার দায় অস্বীকার করেন। তার ভাষায়, আমরা এখনো কিছু করিনি, আর যদি করি, তা গোপন করব না।
সাম্প্রতিক এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ফোনালাপে অংশ নেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, উভয় নেতা পরিস্থিতি শান্ত রাখার ওপর গুরুত্ব দেন এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংলাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
এদিকে, সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে নিরাপত্তা সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের কিছু অংশে ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়। চণ্ডীগড়, মোহালি, ফিরোজপুর ও গুরুদাসপুরসহ কয়েকটি শহরেও অন্ধকার নেমে আসে।
সামরিক উত্তেজনার প্রভাব পড়ে ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামেও। পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যকার চলমান আইপিএল ম্যাচ নিরাপত্তার কারণে স্থগিত করা হয় এবং স্টেডিয়াম খালি করে দেওয়া হয়।
টিকে/টিএ