২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে

ছাত্রদের আর কষ্ট দেবেন না। কারণ, আপনারা কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বা শ্রেণি দ্বারা নির্বাচিত নন, বরং ছাত্ররাই আপনাদের মনোনীত করেছেন। তাই আর অপেক্ষা না করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর রূপনগরের কড়ইতলা মোড়ে আয়োজিত এক যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হলে পুরোপুরি বিজয় এখনো আসেনি, বরং আমাদের আরো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

এজন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন হবে। কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না। কারণ, ফ্যাসিবাদের প্রতিভূরা এখনো রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সক্রিয় থেকে দেশ ও জাতিস্বত্তাবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাই এদের শুধু নিষিদ্ধ করলেই চলবে না বরং অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে অপরাধীদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আগামী ৫ আগস্টের আগেই পতিত স্বৈরাচারের দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় স্বৈরাচার নতুন করে মাথা চাঁড়া দিতে পারে।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘সবাইকে দেখা শেষ, জামায়াতের নেতৃত্বে আল কুরআনের বাংলাদেশ’ স্লোগানকে উচ্চকিত করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে যুব সমাজকে ময়দানে আপোশহীন ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সেলিম বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন ও দুঃশাসনে আওয়ামী ফ্যাসীবাদীরা দেশকে জাহান্নামে পরিণত করেছে। যুব সমাজকে আদর্শ নাগরিকে পরিণত করার পরিবর্তে তাদের হাতে মাদক ও অস্ত্র তুলে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দেশের যুব সমাজকে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আদর্শ নাগরিক এবং কর্মক্ষম করে তোলা হবে। জনগণ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা দেশকে এমন একটি গণমুখী ও কল্যাণকামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই, যে রাষ্ট্রে সব শ্রেণির মানুষের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। দেশে এমন শ্রমনীতি চালু করা হবে যে, শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকারের নিশ্চয়তা পাবেন। মালিক পক্ষই শ্রমিকদের চিকিৎসাসহ আপদকালীন সময়ে সব সমস্যার সমাধান দেবেন। সন্তানদের শিক্ষার সার্বিক ব্যয় নির্বাহ করবেন।

অন্যথায় রাষ্ট্রই এসব সেবা প্রদান করবে। জামায়াত ক্ষমতায় আসলে সকল নাগরিকের জন্য হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। যাতে তারা স্বল্পমূল্যে বা বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা পেতে পারেন। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদের বেতন হবে সর্বনিম্ন পঞ্চাশ হাজার টাকা।

তাদের কোনো কোচিং সেন্টার খোলার প্রয়োজন হবে না। দেশের সব নাগরিক যাতে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান করে নিজেদের মর্জিমতো নেতা নির্বাচন করতে পারেন সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমপিসহ জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সেবক বা খাদেমের দায়িত্ব পালন করবেন। এ জন্য রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার।

থানা আমির আবু হানিফের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও ঢাকা-১৬ আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী কর্নেল (অব.) এম আব্দুল বাতেন, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য নাসির উদ্দীন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী হাসানুল বান্না চপল।

আরএম  


Share this news on: