ভারত-পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনার কারণে এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত হয়েছিল আইপিএল। তবে যুদ্ধবিরতির পর আবারও শুরু হতে যাচ্ছে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও, বিসিসিআই পুনরায় খেলা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে—বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর, বিসিসিআই ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা জানান, যুদ্ধ থামার পর আইপিএল পুনরায় চালুর বিষয়টি নিয়ে গভর্নিং কাউন্সিল ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আজ আলোচনা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি সূচি ঠিক করব যাতে করে টুর্নামেন্ট সফলভাবে শেষ করা যায়।’
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানতে পেরেছে, আইপিএলের ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজিই বিদেশি ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফের সবাইকে ভারতে ফেরানোর চেষ্টা করছে। যাতে যত দ্রুত সম্ভব টুর্নামেন্ট পুনরায় শুরু করা যায়। আইপিএল আবারও মাঠে গড়ানোর সম্ভাব্য সময় ১৫ মে বা তার কাছাকাছি কোনো তারিখে। এর বাইরে রয়েছে ভারতীয় সরকারের অনুমতি পাওয়ার বিষয়।
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিদেশি খেলোয়াড়দের ফিরিয়ে আনা। গতকাল (শনিবার) তাদের বড় একটি অংশ ভারত ছেড়েছেন। তবে যুদ্ধবিরতির পরপরই খেলোয়াড় ও কোচদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য বলেছে কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি। ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফদের যাদের যাত্রাপথে ট্রানজিট ছিল, তাদের আপাতত পরবর্তী যাত্রা বাতিল করে অপেক্ষায় থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আজও (রোববার) ভারত ছাড়ার কথা ছিল কিছু খেলোয়াড়-কোচের। একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের যাত্রা বাতিল করতে বলেছে।
এদিক থেকে কিছুটা সৌভাগ্যবানই বলা চলে গুজরাট টাইটান্সকে। তাদের মাত্র দুজন ক্রিকেটার (জস বাটলার ও জেরাল্ড কোয়েটজে) ভারত ছেড়েছিলেন। তাদের ফেরানোর চেষ্টা করছে আইপিএলের প্রথম দুই আসরের ফাইনালিস্টরা। এর আগে বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচের মাঝেই নিরাপত্তা শঙ্কায় খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কাশ্মিরসহ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে শুক্রবার এক সপ্তাহের স্থগিত করে দেওয়া হয় আইপিএলের চলমান অষ্টাদশ আসর।
আসর স্থগিত হওয়ার আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রাজস্থান রয়্যালস। বাকি সাতটি দল এখনও প্লে-অফের দৌড়ে আছে। অবশ্য এর মধ্যে শীর্ষে (যথাক্রমে গুজরাট টাইটান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও দিল্লি ক্যাপিটালস) থাকা দলগুলোরই সম্ভাবনা বেশি। এখনও বাকি ১২টি লিগ ম্যাচ ও চারটি প্লে অফ। যেগুলো দক্ষিণাঞ্চলীয় তিন শহর বেঙ্গালুরু, চেন্নাই ও হায়দরাবাদে হতে পারে।
এদিকে, চলতি মাসেই টুর্নামেন্ট পুনরায় শুরু করা না গেলে বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়ে বড়সড় ঝামেলায় পড়বে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। তাদের বেশিরভাগই আশাবাদী– মে মাসে টুর্নামেন্ট ফের মাঠ গড়ালে বেশিরভাগ বিদেশি খেলোয়াড় ফিরে আসবে। কিন্তু যদি টুর্নামেন্ট ২৫ মে’র পর পর্যন্ত গড়ায় তাহলে তাদের ফেরার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সূচি অনুযায়ী সেদিন কলকাতায় ফাইনাল হওয়ার কথা। এরপর আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা শুরু হবে বিভিন্ন দেশের।