ভিসি অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনে ববি শিক্ষার্থীরা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণ দাবিতে এবার আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১২ মে) রাত সাড়ে ৯টায় চলমান অ্যাকাডেমিক শাটডাউন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা। জরুরি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এদিকে অনলাইন প্লাটফর্মে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য কথা বলেছেন।

এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে সরে এসে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্য শিক্ষার্থীর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সেখানে দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের ২২টি দাবির মধ্যে অন্তত ১৫টি তিনি ইতোমধ্যেই পূরণ করেছেন। অপরগুলো বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছেন না।আন্দোলনের কোনো পর্যায়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। অথচ শেষ মুহূর্তে তিনি ফেসবুক লাইভে আসছেন।আমাদের স্পষ্ট কথা, তার মতো ফ্যাসিস্ট উপাচার্য আমরা চাই না।

এদিকে সোমবার শিক্ষার্থীদের ডাকা অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক শাটডাউনে ববিতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। দিনভর ২৫টি বিভাগের পরীক্ষা চললেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষকরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে মেনে নিয়ে উপাচার্য সরিয়ে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেননি। তাই মঙ্গলবার দুপুর ২টার মধ্যে উপাচার্য যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেব।

শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলনের মধ্যেই উপাচার্য সোমবার রাত ১০টায় অনলাইন প্লাটফর্মে শিক্ষার্থীর সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়েঅগ্রগতির বিষয়ে জানতে চান। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। উপাচার্য তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তারপরেও শিক্ষার্থীরা তাদের আমরণ কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে শ্রেণি কক্ষ সংকটসহ বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বড় কোনো বাজেটবরাদ্দ করতে পারেনি। সেই প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটা সময় আমাকে ঢাকায় অবস্থান করতে হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়টি শিক্ষার্থীদের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদেরকে বোঝানো হয়েছিল, উপাচার্য ক্যাম্পাসে থাকেন না।

অধ্যাপক মুহসীন উদ্দিনকে সিন্ডিকেট থেকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ ছাড়া সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত। তাদের নিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই সিন্ডিকেটে সমস্যা হয়েছিল। সে কারণে একজনকে সিন্ডিকেট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এটি আদালতের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফপি/টিএ  

Share this news on: