আধিপত্যবাদ কেবল আত্মবিচ্ছিন্নতার পথেই নিয়ে যায় : শি জিনপিং

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে সাময়িকভাবে শুল্ক বিরতির ঘোষণা আসার একদিন পরই ‘বুলিং’ এবং ‘আধিপত্যবাদ’-এর বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন।

বেইজিংয়ে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের নেতাদের এক সম্মেলনে তিনি বলেন, গত শতাব্দীতে যেসব বড় পরিবর্তন আমরা দেখিনি, সেসব এখন দ্রুতগতিতে ঘটছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতির মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

শি বলেন, শুল্ক যুদ্ধ বা বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। বুলিং বা আধিপত্যবাদ কেবল আত্মবিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যায়।

বাণিজ্য যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন চাপের মুখে বারবার তিনি এই বার্তাই দিয়ে আসছেন।

চতুর্থ চীন–সিলাক (কমিউনিটি অব লাতিন আমেরিকান অ্যান্ড ক্যারিবিয়ান স্টেটস) ফোরামে মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই বক্তব্য দেন। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ফোরামের লক্ষ্য হলো লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক জোরদার করা এবং ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানানো।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য ব্যাপকভাবে কমানোর ঘোষণা দেওয়ার একদিন পরই এই বক্তব্য দিলেন শি। মঙ্গলবার শি জিনপিং বলেন, ‘লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে চীন সংহতি আরো জোরদার করবে।’

চীনা প্রেসিডেন্ট জানান, গত বছর চীন ও সিলাক দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে।

তিনি বলেন, চীন, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলো গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্য। উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন আমাদের অধিকার। ন্যায় ও সাম্যতা আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য।

শি বলেন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে একতরফা সিদ্ধান্ত এবং রক্ষণশীল নীতির জোয়ারে আমরা আমাদের লাতিন আমেরিকান ও ক্যারিবীয় বন্ধুদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে প্রস্তুত।

তিনি আরো বলেন, সিলাক দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য চীন ৬৬ বিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ৯.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ঋণ সহায়তা দেবে।
এই ঋণ ইউয়ানে প্রদান করা হবে, যা ওই অঞ্চলে চীনা মুদ্রার ব্যবহারের বিস্তার ঘটানোর একটি উদ্যোগ।

লাতিন আমেরিকার দেশগুলো চীনের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। গত বছর ব্রাজিলের মোট সয়াবিন রপ্তানির ৭৩ শতাংশেরও বেশি গিয়েছে চীনে।

আরআর/এসএন

Share this news on: