ভারত জম্মু-কাশ্মিরে সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা নির্মূল করতে সেনা অভিযান পরিচালনা করছে। ‘অপারেশন কিলার’ নামে এই অভিযানে আজ মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মিরের শোপিয়ান জেলায় ৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।
ভারতের সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় জানিয়েছে, “গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ ১৩ মে রোববার জম্মু-কাশ্মিরের শোপিয়ান জেলার শুকাল কেল্লের এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সেনা সদস্যদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গুলি বিনিময় হয় এবং ৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়।”
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক্সবার্তায় আরও বলা হয়েছে, সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মিরে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে হত্যা করে। নিহতরা সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটি ছিল জম্মু-কাশ্মিরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা এই টিআরএফ।
এ হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়, যেমন সিন্ধু নদের পানি বণ্টনচুক্তি ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল। জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নেয়।
এই উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান চালায় ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর আইএসপিআর জানিয়েছে, অপারেশন সিঁদুর অভিযানে পাকিস্তানে নিহত হয়েছে ৪০ জন এবং আহত হয়েছে ১২১ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন সেনা সদস্য রয়েছেন।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তিন দিনের মধ্যে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান। আরবি ‘বুনিয়ানি উল মারসুস’-এর বাংলা অর্থ সীসার প্রাচীর।
এই পাল্টাপাল্টি সংঘাতের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। শনিবার থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
এসএস/টিএ