ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় শিগগিরই পূর্ণশক্তি নিয়ে সামরিক অভিযান শুরু করবে ইসরায়েলি বাহিনী। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আহত রিজার্ভ সেনাদের সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেছেন, “খুব শিগগিরই আমরা পূর্ণশক্তি নিয়ে অভিযানে নামব। এই অভিযান শেষ করা মানে হামাসকে ধ্বংস করা।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধ থামানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হতে পারে, তবে চূড়ান্ত লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।”
১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পর ১৮ মার্চ থেকে আবারও গাজা জুড়ে বড় পরিসরে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। চলতি মাসের শুরুতে তারা সামরিক তৎপরতা আরও বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, গাজায় দীর্ঘমেয়াদি সামরিক উপস্থিতির পরিকল্পনাও রয়েছে।
এই অভিযানের ফলে গাজার অধিকাংশ মানুষ আবারও বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। আগে থেকেই যুদ্ধের কারণে ২৪ লাখ জনসংখ্যার প্রায় সবাই অন্তত একবার গৃহহীন হয়েছেন। ইসরায়েল এখন ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “স্বেচ্ছামূলক স্থানান্তর কর্মসূচি” অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল এমন একটি প্রশাসন গঠন করেছে যা ফিলিস্তিনিদের গাজা ছাড়তে সহায়তা করবে, তবে এর জন্য প্রয়োজন এমন দেশ, যারা তাদের গ্রহণ করতে রাজি হবে। তার ধারণা, যদি উপযুক্ত সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে “৫০ শতাংশেরও বেশি ফিলিস্তিনি” গাজা ত্যাগ করবে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় গাজাবাসীদের জর্ডান বা মিসরের মতো প্রতিবেশী দেশে পাঠানোর প্রস্তাব সামনে আসে। তবে কায়রো, আম্মানসহ অন্যান্য আরব দেশ ও ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল হামলার পর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫২ হাজার ৯০৮ জন মানুষ, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৮ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে এখনও ৫৭ জন গাজায় অবস্থান করছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ৩৪ জনকে মৃত ঘোষণা করেছে।
টিকে/টিএ