তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
বুধবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে কাকরাইল মসজিদের পাশে পুলিশি ব্যারিকেডের সামনে জবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এই সময় আন্দোলনের বিষয়ে কথা বলার সময় শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেউ তার মাথায় পানির বোতল ছুঁড়ে মারেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বোতল নিক্ষেপকারীকে শনাক্ত করা যায়নি।
আলোচনার শুরুতে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আপনারা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।’
পরে দুপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ কিছু পুলিশ সদস্য হয়তো উসকানি...’—এই কথা বলতেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার শুরু করেন। এমন সময় হঠাৎ তার মাথায় কিছু একটা পড়তে দেখা যায়।
এরপর মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমি আর কথা বলব না।’ এরপর তিনি পুলিশি নিরাপত্তায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে চলে যান।
পরে যমুনার সামনে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সেখানে তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই আন্দোলন করছেন। তারা তিনটি দাবি তুলেছেন, যার যৌক্তিকতা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিচার করবে। তিনি বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসন সংকটে আছে, সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে। শিক্ষার্থীরা ৭০ শতাংশ আবাসন ভাতা দাবি করেছেন, সেটি কত শতাংশ করা যায় তা আলোচনার বিষয়। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত করা এবং বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও তারা তুলেছেন।
তিনি আরও বলেন, দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্টেকহোল্ডারদের বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হবে এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলন করেছিলেন তারা আমার ওপর হামলা করেননি, বরং যারা নাশকতার উদ্দেশ্যে আন্দোলনে এসেছেন, তারাই এটি করেছে। আজকের কথা ছিল, আমার সঙ্গে তাদের মিটিং হবে—তা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগামীকাল সকালে মিটিং হওয়ার কথা থাকলেও সেটিও হয়নি। হঠাৎ করে কীভাবে মিছিল কাকরাইল পর্যন্ত এলো, তা জানা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ থেকে যমুনা অভিমুখে চল এই রাজনীতি, এই মুভমেন্ট আর চলতে দেওয়া হবে না। আমরা কঠোর অবস্থান নেব। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এই কাজ করেছে, তারা বড় ভুল করেছে। যারা নাশকতার উদ্দেশ্যে এসেছে, তাদের আলাদা করা দরকার। তাদের চিহ্নিত করতে হবে।’
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষক-ছাত্র যখন আন্দোলন করে, তখন প্রথমেই আলোচনা করতে হবে, সংলাপ করতে হবে। প্রথমেই বলপ্রয়োগ নয়।’
শিক্ষকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন। তারা শিক্ষার্থীদের কাছে অসহায়। নৈতিকতার জায়গা থেকে শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষা করা উচিত ছিল। আমি যখন কথা বলতে গিয়েছিলাম, তারা সেটা পারেনি। হয়তো পরে তারা বুঝবে।’
এসএস