চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস না হওয়া কনটেইনার দ্রুত নিলামে বিক্রির আদেশ

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করে আমদানিকারকরা দীর্ঘদিন ধরে খালাস না নেওয়া পণ্যবাহী কনটেইনার ও খোলা পণ্য দ্রুত নিলামে বিক্রির আদেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত খালাস না হওয়া কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে। দীর্ঘদিনের পুরনো কেমিক্যাল ও বিপজ্জনক পণ্য বিস্ফোরণ ঝুঁকিসহ বন্দরের সামগ্রিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করেছে।

এই ঝুঁকি নিরসনে বিদ্যমান প্রমিত নিলাম প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ এড়ানো সম্ভব হয় না। নিয়ন্ত্রিত পণ্য খালাসে জটিলতা, অনিষ্পন্ন মামলা, নিলামের দরদাতা কর্তৃক পণ্য খালাস না করা, লজিস্টিকসের অভাবসহ নানা কারণে কর্তৃপক্ষ স্বল্পতম সময়ে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে না।

এ ক্ষেত্রে পণ্য জট নিরসন ও খালাস প্রক্রিয়া সহজীকরণে ‘চট্টগ্রাম বন্দরে দ্রুত নিলাম ও ধ্বংস কার্যক্রম সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ ২০২৫’ জারি করেছে এনবিআর। দ্রুত পণ্য খালাস, শ্রম, অর্থ ও কর্মঘণ্টা সাশ্রয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় রোধ, নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসন, ভৌত অবকাঠামো, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কনটেইনার জটসহ বন্দরের সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যতম উদ্দেশ্য।

এ পরিস্থিতিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিলাম ও নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যের (যানবাহন ব্যতীত) বিক্রয়, ব্যবস্থাপনা ও ধ্বংস কার্যক্রম প্রক্রিয়া সহজীকরণে নিম্নবর্ণিত নির্দেশনাসংবলিত বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে।

নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যসমূহের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ ব্যতীত প্রথম নিলামে (বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতীত) প্রাপ্ত সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রয় করা যাবে। আমদানিনীতি বা রপ্তানিনীতি অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষে, নিয়ন্ত্রিত বা নিষিদ্ধ অথবা পণ্যের গুণগতমান নষ্ট হওয়ার কারণে বা অন্য কোনো কারণে নিলামের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয় অথবা সম্ভব হয়নি তা ধ্বংস বা নিষ্ক্রিয়করণের লক্ষ্যে নিলাম ব্যতীত বিশেষায়িত সংস্থা বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট বিনা মূল্যে হস্তান্তর করা যাবে।

যদি দুটি নিলামের মাধ্যমেও কোনো পণ্য বিক্রয় করা সম্ভব না হলে অথবা দরপত্র পাওয়া না গেলে তৃতীয় নিলাম ব্যতিরেকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাপূর্বক পণ্য গ্রহণে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের নিকট সর্বোচ্চ প্রস্তাব মূল্যে বিক্রয় এবং পরীক্ষন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ব্যবহার উপযোগিতা রয়েছে মর্মে প্রত্যয়নকৃত মেয়াদোত্তীর্ণ বিপজ্জনক পণ্য বা কেমিক্যাল জাতীয় পণ্যসমূহ প্রকৃত ব্যবহারকারী বা বিশেষায়িত সংস্থা বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট সর্বোচ্চ অফার মূল্যে বিক্রয়ের বিধান রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, নিলাম প্রক্রিয়া সহজীকরণে জারীকৃত এ আদেশ বাস্তবায়িত হলে বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা কনটেইনার জট কমবে এবং বন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন, সহজ, সময় সাশ্রয়ী, আমদানি-রপ্তানিকারকদের খরচ কমাসহ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এতে বন্দরের সুবিধাভোগীরা সুফল ভোগ করবে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।

এফপি/এস এন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘মাহফুজ আলমের ওপর আওয়ামী লীগের বড় হামলার আশঙ্কা’- শরীফ ওসমান হাদী May 15, 2025
img
কাতারের সামরিক ঘাঁটিতে ‘গড ব্লেস দ্য ইউএসএ’ গানে নাচলেন ট্রাম্প May 15, 2025
img
স্বর্ণের দামে বড় পতন, শুক্রবার থেকে কার্যকর May 15, 2025
img
বুবলীর ‘পুলসিরাত’ হয়ে গেল ‘সরদার বাড়ির খেলা’ May 15, 2025
img
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন মিশা সওদাগর May 15, 2025
img
সান্ডার বিরিয়ানি আর মাংস নিয়ে কেন এত হইচই? May 15, 2025
img
পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে প্রস্তুত ইরান May 15, 2025
img
৮ মাসে পাচার হয়েছে ৯০ হাজার কোটি টাকা: মির্জা আব্বাস May 15, 2025
img
স্পার্ম কাউন্ট কমায় যেসব খাবার May 15, 2025
img
আহত দুই সাংবাদিকের একজনের ফুসফুসে সংক্রমণ, অন্যজনের কাঁধে ভাঙা হাড় May 15, 2025