পুতিনের সঙ্গে আমি না বসলে কিছুই হবে না : ট্রাম্প

ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি সম্ভব নয়। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় পুতিনের অনুপস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন ও আমি যতক্ষণ না একসঙ্গে বসছি, ততক্ষণ কিছুই হবে না। পুতিন ভেবেছিলেন আমিও আলোচনায় উপস্থিত থাকব। এজন্য তিনি যেতে চেয়েছিলেন।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন রাশিয়া জানিয়েছে, ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় প্রেসিডেন্ট পুতিন অংশ নেবেন না।এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সরাসরি আলোচনার জন্য পুতিনকে আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জেলেনস্কিকে ‘করুণ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি প্রশ্ন তোলেন, পুতিন নিজেই কেন সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন?

পুতিন যুদ্ধবিরতি চান না উল্লেখ করে জেলেনস্কি বলেন, আমি আশা করি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে (ইউক্রেনের সমর্থনে থাকা দেশগুলো) রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

তুরস্কের আঙ্কারা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনায় যোগ দিতে প্রস্তুত ছিলেন, যা ‘ভালো রাজনৈতিক সদিচ্ছা’ প্রদর্শন করে।

সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও তুরস্কে বিভিন্ন ফরম্যাটে আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করে জেলেনস্কি আরও বলেন, পুতিন যদি পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনায় প্রস্তুত থাকেন, তবে তিনিও আলোচনায় বসতে রাজি আছেন।

ইউক্রেনের অংশীদাররা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের প্রধান কাজ হলো ‘গঠনমূলক’ হওয়া, যে কারণে তারা তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে।
 
আজ তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে প্রথমবারের মতো মস্কো ও কিয়েভের সরাসরি শান্তি আলোচনার আয়োজন করা হয়। এর আগে রোববার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘কোনও শর্ত ছাড়া’ ইউক্রেইনের সঙ্গে এই আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেশটি জানায়, বৈঠকে যাচ্ছেন না পুতিন। এর বদলে অভিজ্ঞ টেকনোক্রেটদের একটি দল সেখানে পাঠাচ্ছে রাশিয়া।

এরপর মস্কোর প্রতিনিধিদলের নাম ঘোষণা করে ক্রেমলিন। এর মধ্যে রয়েছে পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেদিনস্কি ও উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্ডার ফোমিনসহ কয়েকজন কুশলি আলোচক।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘ডামি’ প্রতিনিধিদল পাঠানোর অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের বোঝা দরকার, রুশ প্রতিনিধি দল কোন পর্যায়ের, তাদের দায়িত্ব কী এবং তারা আদৌ কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে কি না।’
 
জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলে আছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সামরিক বাহিনীর প্রধান, গোয়েন্দা প্রধান ও প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেন পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে বলেও জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

এমআর


Share this news on: