রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী সার্ভার স্টেশন এলাকায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল থেকে ভাস্কর্যটি ভাঙতে শুরু করেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা রাঙামাটি জেলার সদস্যরা। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
বিকেলে শহরের ভেদভেদী বাজার থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে ‘মার্চ ফর ফ্যাসিবাদী আইকন’ কর্মসূচি শুরু করা হয়। মিছিলটি সার্ভার স্টেশনের সামনে এসে ৩ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
প্রশাসনের কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে নিজেরাই ‘ফ্যাসিবাদের আইকন’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার কাজ শুরু করেন বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
আন্দোলনকারী রাঙামাটি সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমাম হোসাইন বলেন, সারাদেশের কোথাও ফ্যাসিবাদের মূর্তি বা ভাস্কর্য নেই, কিন্তু আমাদের রাঙামাটিতে রয়ে গেছে। এই ভাস্কর্য অপসারণের জন্য আমরা দীর্ঘ ৯ মাস প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি, কথা বলেছি। কিন্তু তারা বারবার আশ্বাস দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিন দিন আগেও আমরা প্রশাসনকে এই ফ্যাসিবাদের মূর্তি অপসারণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু তাদের নির্লিপ্ততার কারণে আজ রাঙামাটির আপামর ছাত্র-জনতা নিজেই এই মূর্তি অপসারণের কাজ শুরু করেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি রাঙামাটি জেলার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান রোমান বলেন, আমরা ৩ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই আমরা এই মূর্তি অপসারণের কাজ শুরু করেছি। এই মূর্তি অপসারণের মাধ্যমে রাঙামাটি কলঙ্কমুক্ত হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে রাঙামাটি প্রেসক্লাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা ছাত্র-জনতা প্রশাসনকে আরও ১২ ঘণ্টার চূড়ান্ত সময়সীমা দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে মূর্তি অপসারণ না হলে ছাত্র-জনতা আর কোনো অপেক্ষা করবে না। আগামীকাল বাদ জুমা বিকেল ৩টা থেকে ‘মার্চ ফর ফ্যাসিবাদী আইকন’ কর্মসূচি ভেদভেদি বাজার থেকে শুরু হবে।
এই মিছিল সার্ভার স্টেশনের সামনে গিয়ে শেষ হবে এবং সেখানেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি অব্যহত থাকবে। এই আন্দোলন শুধু একটি মূর্তির বিরুদ্ধে নয়, এটি স্বৈরতন্ত্র, আধিপত্যবাদ এবং দমন পীড়নের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ।
আরআর/টিএ