শেষ মুহূর্তে হামলার ভয়: কাশ্মির সীমান্তে বাঙ্কার বানাতে ব্যস্ত স্থানীয়রা

যেকোনো সময় ফের যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে—এমন আশঙ্কায় ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে শুরু হয়েছে বাঙ্কার নির্মাণের হিড়িক। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই বাড়ি বাড়ি মাটি খুঁড়ে তৈরি করছেন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র। অন্যদিকে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আশ্রয় হারানোরা সরকারের কাছে টেকসই ও স্থায়ী বাঙ্কার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

সীমান্তে ভারতের গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত জম্মু-কাশ্মীরের বহু ঘরবাড়ির দেয়ালে এখনো রয়ে গেছে গভীর গর্ত, জানালার কাঁচ ভাঙা, খসে পড়া পলেস্তারা। এলাকাটি যেন আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আবারও সংঘাত শুরু হলে তার প্রথম শিকার হবেন তারা। এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা নিজেরাই মাটি খুঁড়ে বাঙ্কার করছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত হলেও ভবিষ্যতে হামলা হলে এগুলো আমাদের কতটা সুরক্ষা দেবে, জানি না।’

আরেকজন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছি। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় পদ্ধতিতে বানানো বাঙ্কারে কতটা নিরাপদ থাকব, বলা মুশকিল। তাই টেকসই নিরাপত্তা দরকার।’

অন্যদিকে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরেও একই চিত্র। নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে নিজের বিধ্বস্ত বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। কেউ কেউ আশ্রয় হারিয়ে এখনও সংগ্রামে আছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমান্তে বসবাস করলেও নেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা। তারা বলছেন, ‘আমরা বারবার সরকারের কাছে বলেছি, স্থায়ী বাঙ্কার তৈরি করুন। কিন্তু কেউ শোনেনি। এখন আবার যুদ্ধ হলে কোথায় আশ্রয় নেবো?’

এমন পরিস্থিতিতে আরও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া। শনিবার (১৭ মে) শেষ হচ্ছে ওই চুক্তি। এখন পর্যন্ত দুই দেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও নিয়ন্ত্রণ রেখা ঘিরে উত্তেজনা পুরোপুরি কমেনি। পাল্টাপাল্টি হুমকি ও হামলার শঙ্কায় কাশ্মীরের দুই পাশে এখন দিন কাটছে আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রোকেয়া-ইভা, দু’জনকেই লাগবে কাবিলার May 18, 2025
img
ইংল্যান্ডে ৯৬ বলে ১৫২ রানের চোখধাঁধানো ইনিংস সাব্বিরের May 18, 2025
img
আদালত থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও আসামি May 18, 2025
সমালোচনার সময় নবীজি যা করতেন | ইসলামিক জ্ঞান May 18, 2025
শাকিবের সঙ্গে সাবিলা, যা বললেন অপু বিশ্বাস May 18, 2025
ব্রুকলিন ব্রিজে মেক্সিকান জাহাজের ধাক্কা, প্রাণ গেল ২ জনের May 18, 2025
সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি দেখছেন না জামায়াতের নায়েবে আমির May 18, 2025
img
অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে আদালতে তোলা হবে সোমবার May 18, 2025
img
হামলা বন্ধে চাপ বাড়ছে নেতানিয়াহুর ওপর May 18, 2025
img
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা সম্প্রসারণে নতুন নীতিমালা জারি May 18, 2025
দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানালেন সালমান মুক্তাদির May 18, 2025
img
নুসরাতকে এভাবে গ্রেফতার পুরো বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে :এনসিপি নেতা May 18, 2025
img
প্রতিভা আর অদম্য মনোবল ছাড়া পেছনে কেউ ছিল না: হুমা কোরেশি May 18, 2025
তিন আসামীর খালাসে ক্ষুব্ধ আছিয়ার মা May 18, 2025
img
যখনই পাকিস্তানে আসি, উপভোগ করি: সাকিব May 18, 2025
img
তখন অন্যরকম একটা অবস্থা ছিল, আমাদের সবার: জয়া May 18, 2025
img
পর্দার শেখ হাসিনা থাইল্যান্ড পালাচ্ছিলেন! May 18, 2025
‘১০ মাস গড়ায় গেল, এখনও মায়ের পেটের বাচ্চা হইল না’ May 18, 2025
img
টানা দ্বিতীয়বারের মতো বুন্দেসলিগার টপ স্কোরার কেইন May 18, 2025
img
নির্বাচন বিলম্বিত হলে অস্থিরতা বাড়বে: আমির খসরু May 18, 2025