টেকসই, শ্রমিকবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চা শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে অক্সফাম ও ফেয়ার পে ফাউন্ডেশন (এফপিএফ)।
মঙ্গলবার (২০ মে) অক্সফামের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে এবং ফেয়ার পে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রদূত শেখ আলিউর রহমান এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এতে ‘মডেল টি স্টেট’ গড়ে তোলার ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে, যা ন্যায্য মজুরি, নৈতিক ব্যবসা, মর্যাদাপূর্ণ শ্রমপরিবেশ, পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম, লিঙ্গসমতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উদাহরণ হয়ে উঠবে।
এই কৌশলগত অংশীদারিত্বটি বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক পর্যায়ে ন্যায্যতা, নৈতিক ব্যবসা, সমতা ও শ্রম অধিকারে ন্যায়বিচারের জন্য একটি আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করবে। বাংলাদেশের চা বাগান থেকে এই যাত্রা শুরু হচ্ছে।
ঔপনিবেশিক যুগের কাঠামো ও বৈষম্যমূলক অনুশীলনের কারণে চা শিল্প এখনো হাজারো শ্রমিকের- বিশেষ করে নারীদের দারিদ্র্যের একটি মূল উৎস। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সেই দুষ্টচক্র ভাঙতে এবং ন্যায্য মজুরি, নৈতিক উৎপাদন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করবে দুই প্রতিষ্ঠান।
যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলাদেশি প্রবাসীরা অংশগ্রহণ করেন।
সমঝোতা স্মারক নিয়ে ফেয়ার পে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ আলিউর রহমান বলেন, এই চুক্তি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি একটি প্রতিশ্রুতি, যা শ্রমিকদের মর্যাদা, সমতা ও সম্ভাবনাময় জীবনের জন্য কাজ করবে। অক্সফামের তৃণমূল ক্ষমতায়নের অভিজ্ঞতা এবং ফেয়ার পে-এর বৈশ্বিক ন্যায্যতার দৃষ্টিভঙ্গি একত্রে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করবে, যা শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এই অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে মডেল টি স্টেট বাস্তবায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অক্সফাম ও এফপি এফ একসঙ্গে কাজ করবে। এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক কাঠামো ও ক্ষমতার বিশ্লেষণ, বাজার সম্ভাবনা যাচাই, ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি প্রয়োগ, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং নারী শ্রমিকদের নেতৃত্বে সক্ষমতা বৃদ্ধি।
অনুষ্ঠানে অক্সফাম গ্রেট ব্রিটেনের শীর্ষ নির্বাহী ড. হালিমা বেগম বলেন, “ন্যায্য মজুরি নিয়ে এই অংশীদারিত্ব মাধ্যমে আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মডেল টি স্টেট-এ বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা এমন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে শ্রমিক ও মালিক উভয়ই অংশীদার, সমন্বিত লক্ষ্য ও মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করবে।”
এই সমঝোতা স্মারকে স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি ও প্রভাব বিস্তারের কৌশলগত দিকনির্দেশনাও রয়েছে। বাংলাদেশে গ্লোবাল ফেয়ার পে চাটার চালু থেকে শুরু কর পাঁচ বছর মেয়াদি গণমাধ্যম অংশীদারিত্ব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বেসরকারি খাত ও আন্তর্জাতিক বাজারে সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা হবে।
অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, ন্যায্যতা একটি অধিকার। এই অংশীদারিত্ব আমাদের বৈষম্যমূলক কাঠামো চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিচ্ছে এবং সম্মান, স্থায়িত্ব ও ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি বিকল্প বাস্তবতা নির্মাণ করবে। আমরা কেবল কল্পনা করছি না- আমরা পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছি।
আরএ