দেশের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর গঠন, কার্যক্রম, নিবন্ধন, তদারকি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিস্তারিত দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করে ‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই গেজেট প্রকাশিত হয়। এতে ঋণ খেলাপি ও কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন বিধিমালায় সদস্যপদ, নির্বাচন, বার্ষিক সাধারণ সভা, নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল এবং সংগঠন বাতিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াসমূহ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসায়িক পরিবেশে পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধির জন্য বেশ কয়েকটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে সরকারি তদারকি আরও কার্যকর হবে।
বিধিমালার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদ ও সাধারণ পরিষদের গঠন ও নির্বাচনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদে মোট ৪৬ জন পরিচালক থাকবেন, যার মধ্যে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং দুইজন সহসভাপতি।
নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শ্রেণির বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কোটার ভিত্তিতে পরিচালক নির্বাচন করা হবে। চেম্বার গ্রুপ, অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ ও সাবস্ক্রাইবার গ্রুপ থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হবেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সংগঠনগুলোকে নবায়ন সনদ, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী এবং সদস্যপদ ফি জমা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
পরিচালক পদপ্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের কার্যকরী সদস্য হতে হবে এবং পূর্ববর্তী সময়ে সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এমন প্রমাণ থাকতে হবে। একইসঙ্গে সাধারণ পরিষদের সদস্য হিসেবে যোগ্য হতে নবায়ন, নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল এবং আর্থিক দায়মুক্তির শর্ত পূরণ আবশ্যক।
নতুন বিধিমালায় নির্বাচন পরিচালনার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বাধীন নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, জাল বা ভুয়া কাগজপত্র দাখিল, ভোটার তালিকায় অনিয়ম বা প্রভাব খাটানোর প্রমাণ মিললে সদস্যপদ বাতিল অথবা নির্বাচনী প্রার্থিতা স্থগিত করার বিধান রাখা হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ঋণ খেলাপি ও কর ফাঁকিবাজরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর মধ্যে পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বাড়বে। একইসঙ্গে ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও উন্নত ও টেকসই হবে।
এসএন