পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ-ভারত

পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় ভারত-বাংলাদেশ দুদেশই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ বিশ্লেষকদের। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাণিজ্যিক সুবিধা ব্যহত হলে শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দুদেশের জনগণ।

তবে, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার এলে সম্পর্ক অনেকটাই স্বাভাবিক হতে পারে বলে মত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়।

পণ্য রপ্তানিতে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পরপরই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সূতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশ। এর একমাস পরই স্থলপথে তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে ভারত।

তবে, রাজনৈতিক টানাপড়েনের প্রভাব বাণিজ্যে পড়া মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছেন না অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পাল্টাপাল্টির তো কোনো শেষ নেই এবং সেটার ফলে দুই দেশেরই ভোক্তা, উৎপাদাক রপ্তানিকারক, আমাদানিকারক সবারই ক্ষতি। সুতরাং অর্থনৈতিক এবং জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা মাথায় রেখে অগ্রসর হওয়া ভালো হবে।’

তাই মুখোমুখি অবস্থানে না থেকে আলোচনার টেবিলে বসার পরামর্শ অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এখন যেটা অশুল্ক বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ হচ্ছে সেটা আলাপালোচনার মাধ্যমে নিরসন করলে আমাদের দেশের জন্য ভালো হবে। এটাকে কীভাবে উইন উইন করা যায় এবং মর্যাদাপূর্ণ একটা সম্পর্কের মাধ্যমে এটা করা যায় সেটাই আসল বিবেচ্য হওয়া উচিত।’

স্বাধীনতার পর সীমান্ত হত্যা, ফারাক্কাসহ নানা ইস্যুতে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের ওঠা-নামা হয় বেশ কয়েক দফায়। তাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে দুদেশের জনগণকে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ তাদের।

আন্তর্জাতিক সম্পকি বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘তারা একটা জিনিস বলেছে যে নির্বাচিত সরকার আসলে স্বাভাবিকরণের দিকে যাবে। ভারত ওই দৌড়ে পিছিয়ে থাকবে না, কারণ ভারত জানে পিছিয়ে থাকলে তাদেরও অর্থনীতির ক্ষতি হয়ে যাবে, অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আরও বেশি সম্পর্ক করে ফেলবে।

কূটনীতিতে দক্ষতা ও পারদর্শিতার কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করেন এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।

ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ থামলেও তার ক্ষতি, চললেও তার ক্ষতি। পুরো দেশটাই হাতছাড়া হয়ে গেছে কিন্তু, হয় আমেরিকার দিকে না হয় রাশিয়ার দিকে। তাহলে আমি কেন যুদ্ধ করলাম, ইতিহাস জেলনেস্কিকে কীভাবে দেখবে আমি জানি না, কিন্তু এই জেলনেস্কি সিনড্রমের মধ্যে যেন আমরা না পরি।’

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ঢাকা-দিল্লি দুই পক্ষকেই আন্তরিক হতে হবে বলেও মনে করেন ইমতিয়াজ আহমেদ।

টিকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সংবাদ সম্মেলন ডাকল এনসিপি May 24, 2025
img
দিল্লী থেকে আরেকটি ১/১১ ঘটানোর ষড়যন্ত্র চলছে: এনসিপি নেতা শিশির May 24, 2025
img
পদত্যাগ করার এখতিয়ার ইউনূস সরকারের নেই: ফয়জুল করীম May 24, 2025
img
পিনাকী, ইলিয়াস ও কনকের ঐক্যবদ্ধ আহ্বান May 24, 2025
img
নেতানিয়াহু'র দেশকে দয়া দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও প্রধান May 24, 2025
img
ফ্লোরাল গাউনে অভিষেকেই কান জয় আলিয়ার! May 24, 2025
img
শনিবার বিএনপি-জামায়াতের সাথে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা May 24, 2025
img
ড. ইউনূসের পদত্যাগ নয়, উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন চায় জনগণ : প্রিন্স May 24, 2025
img
সম্পর্কের জটিল বন্ধনে ‘গৃহপ্রবেশ’, কোন কাহিনি উঠে আসবে পর্দায়? May 24, 2025
img
ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মেধা-অধ্যবসায় আমাদের মুগ্ধ করেছে: জোবাইদা রহমান May 24, 2025
img
সাকিব ব্যর্থ, রিশাদের নৈপুণ্যে ফাইনালে লাহোর May 24, 2025
img
শাকিব খানের ধামাকা থামছেই না, প্রশংসায় ভাসালেন বুবলী! May 24, 2025
img
নিজের মেয়েকে ফিরে পেতে তওবা করে অভিনয় ছাড়েন শাবানা May 24, 2025
img
এবি ডি ভিলিয়ার্সের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডে ভাগ বসালেন ফোর্ড May 23, 2025
img
ক্ষুধা পেটে ফুটপাতেই ঘুমিয়েছি : মিঠুন চক্রবর্তী May 23, 2025
img
নাবালক উপদেষ্টারা জুলাই ঐক্য নষ্ট করেছে : নুর May 23, 2025
img
অশালীন ভঙ্গি দেখে ভেঙে পড়েন সোফি May 23, 2025
img
শেখ হাসিনা সরকারকে ‘দেবদাস’ আখ্যা দিয়ে প্রতীকী মন্তব্য জয়ের May 23, 2025
img
দেশ রক্ষায় ডক্টর ইউনূসের প্রতি সাবেক বিসিএস অফিসারদের পূর্ণ সমর্থন May 23, 2025
img
নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে : জোনায়েদ সাকি May 23, 2025