লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.) বলেছেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৯টি দেশের মধ্যে সমুদ্রবন্দরে আমদানি পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া শেষ করতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে পাকিস্তানে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক অব্যবস্থাপনার বিষয়টি বহুল আলোচিত।
আমদানিকারকরা তাদের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমদানি করা পণ্যের দামও বাড়িয়ে দেন। এতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। যেহেতু দেশের সিংহভাগ পণ্যের আমদানি-রপ্তানি হয় এ বন্দর দিয়ে, সেহেতু বন্দরের অব্যবস্থাপনা দূর করতে দেরি হলে দেশের উন্নয়নে এর প্রভাব পড়বে। এ বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়নসহ অন্যান্য দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। বন্দর নিয়ে যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।
আজ শনিবার (২৪ মে) অলি আহমদের গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং বৃহত্তম বন্দর। দেশের প্রায় ৯৯% কন্টেইনার এবং ৯৩% আমদানির রস্তানি কার্যক্রম এই বন্দরের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়ে থাকে। যদিও বাংলাদেশে আরও দুইটি সমুদ্র বন্দর রয়েছে তথাপিও এটি বাংলাদেশের একমাত্র বন্দর বললে অত্যুক্তি হবে না।
কর্নেল অলি বলেন, বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য এবং তার ৯৮ শতাংশ নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দিয়ে সম্পন্ন হয়। প্রাকৃতিক কারণে ২০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে না। এ কারণে বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বন্দরে উন্নীত করতে অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বের খ্যাতিমান বন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যদি সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৩৩ শতাংশ বেড়েছে, যা অব্যাহত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখাচ্ছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে পণ্য আমদানি হয়েছে ৭.৮৭ কোটি টন। গত অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য আমদানি হয়েছিল ৭.৪০ কোটি টন। এই সময়ে এসব আমদানি পণ্যের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪.২৩ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের ৩.৭০ লাখ কোটি টাকার তুলনায় ১৪.৩৫ শতাংশ বেশি।
এসএম/টিএ