পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় টানা ভারী বর্ষণের ফলে মারাত্মক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং হাজারো মানুষ আটকা পড়ে রয়েছে। এ অবস্থায় উদ্ধার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা।
স্থানীয় জরুরি পরিষেবা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সেখানে অন্তত ১০,০০০ সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণে অনেক শহর সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, গবাদি পশু ভেসে গেছে এবং বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে জানান, ফেডারেল, রাজ্য ও স্থানীয় সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করছে যাতে মানুষ জরুরি সহায়তা এবং পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়।
রাজ্য জরুরি পরিষেবা কমিশনার মাইক ওয়াসিং বলেন, পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি করলেও, বহু মানুষ এখনও নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন।
তিনি জানান, শুক্রবার (২৩ মে) রাতেই ৫২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর তারির কাছে একটি প্লাবিত এলাকায় উদ্ধার হওয়া ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে। শুক্রবার (২৩ মে) বন্যার কারণে নির্ধারিত তারি সফর বাতিল করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরো প্রাণহানির খবর শুনে সত্যিই মর্মাহত।”
একপর্যায়ে বন্যা পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয় যে, প্রায় ৫০,০০০ মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। কয়েক দিনের ঝড়ো বৃষ্টিতে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে কয়েক মাসের বৃষ্টির সমপরিমাণ পানি নেমে এসেছে, ফলে সেসব এলাকায় ধ্বংসস্তূপ ও মৃত প্রাণীতে ভরে গেছে। এ ছাড়া প্লাবিত রেললাইনের কারণে ট্রেন পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে এবং সিডনি বিমানবন্দরের দুটি রানওয়ে বন্ধ থাকায় ফ্লাইটে বিলম্ব ঘটে।
অস্ট্রেলিয়া গত কয়েক বছরে একাধিক চরম আবহাওয়া পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব দুর্যোগের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের বড় ভূমিকা রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভয়াবহ খরা, দাবানল ও এখন নিয়মিত বন্যা দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে। সূত্র : আল জাজিরা
আরএ/এসএন