বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মুক্ত সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। গত ১০ মাসে মুক্তপ্রাণ অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠক ও শিল্পীরাও পরিকল্পিত মব সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন।’
আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে বিদায় দেওয়ার পর ভিন্ন চেহারায় নতুন ফ্যাসিবাদী চিন্তা, দর্শন সংস্কৃতিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ দেশের ঐতিহ্যবাহী লোকজ গণসংস্কৃতির ওেপর ধারাবাহিক আক্রমণ চলছে।
কোথাও কোথাও প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় হামলা আক্রমণের ঘটনা ঘটছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে সংহতি সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে সংগঠনের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এপোলো জামালীর স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সংগঠনের সভাপতি ইফতেখার আহমেদ বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় আরো বক্তৃতা করেন কবি মোহন রায়হান, নারীনেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, ড. কাজী ইকবাল, চারণ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠির সভাপতি নিখিল দাস, শিল্পী শাহানা জামালী, লেখক সাগরিকা জামালী, সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান নিযামী প্রমুখ।
সভায় কবি মোহন রায়হান বলেন, জনসংস্কৃতির ক্ষেত্রে যারা গায়ের জোরে বিশেষ কোন সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে চায় তারা আমাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রেই বিশ্বাস করেনা।
তিনি বলেন, নানা বৈচিত্র্যের মধ্যেই আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতির বিকাশ ও বিস্তৃতি ঘটেছে। তিনি উগ্রবাদ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য হরণের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি ন্যায্য, মানবিক, গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক গণসংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগঠকদের প্রতি আহবান জানান।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, গণসাংস্কৃতিক অভিযানের মধ্যেই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এপোলো জামালী বেঁচে থাকবেন। তাঁর আকাঙ্খাকে ধারণ করে দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, অসহিষ্ণুতা, অনাকাঙ্খিত জঙ্গীবাদী হুমকি ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
একটি সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, সাম্যবাদী ও বহুস্তরভিত্তিক সাংস্কৃতিক পরিসরের দেশ গঠনে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা।
সভার শুরুতে এপোলো জামালীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে নিরাবতা পালন করা হয়। এরপর এপোলো জামালী রচিত গান পরিবেশন করেন তিথি সুবর্ণা ও রাশিদা বেগম। কবিতা আবৃত্তি করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
এফপি/এসএন