বাংলাদেশের মানুষ চায় ‘আগামী ডিসেম্বরের ভেতরেই নির্বাচন হতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক সাবেক সাফজয়ী ফুটবলার আমিনুল হক।
শনিবার (৩১ মে) দিনব্যাপী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর এর পল্লবীর ৩নং ওয়ার্ড, রূপনগর থানার ৭নং ওয়ার্ড, দোয়ারীপাড়া, ৬নং ওয়ার্ড, দক্ষিণখান থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা ও ভাষাণটেক থানার বিভিন্ন স্পটে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে রান্না করা খাবার ও শাড়ি লুঙ্গি বিতরণকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমিনুল হক বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা বারবার আহবান করেছি- আপনারা দ্রুত সময়ের ভেতরে একটি নির্বাচন দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়- গত ১৭ বছর স্বৈরাচার সরকার নির্বাচনের কথা শুনলে যেমনটি করে টালবাহানা করেছিল, অন্তর্বর্তী সরকারকেও দেখছি তারাও স্বৈরাচারের মতো টালবাহানা করছেন।
বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের সকল রাজনৈতিক দল এবং এদেশের মানুষ চায়- আগামী ডিসেম্বরের ভেতরেই নির্বাচন হতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে একটি দল ছাড়া আর কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা সঠিক নয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি শুধু একাই নির্বাচন চায় না, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের সকল রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন ও সুশীল সমাজ এবং এদেশের সাধারণ মানুষ সকলেই একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।
আমিনুল হক বলেন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই জনগণের সরকারই পারবে একমাত্র পরিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করতে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করতে। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আওয়ামী প্রেতাত্মাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে।
নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে আমিনুল হক বলেন, গত ১৭ বছর এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। বাংলাদেশের মানুষ এখন ভোট দিতে চায়। মানুষ তার নাগরিক অধিকার- ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। গত ১৭ বছর এদেশের মানুষ আন্দোলন করেছে সংগ্রাম করেছে লড়াই করেছে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। সেই নির্বাচনের জন্য এদেশের মানুষ এখন অপেক্ষা করছে।
সংস্কার ও স্বৈরাচারের বিচারের প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অভিযোগ করে আমিনুল হক বলেন, আপনারা সংস্কারের কথা বলেছেন কিন্তু আপনারা সংস্কারের ধারের কাছেও নাই। আপনারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের কথা বলছেন, কিন্তু আপনারা তাদের বিচারের ধারে কাছেও নাই। কারণ আপনাদের ভেতরে স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রকারীরা ঢুকে গেছে। আপনারা স্বৈরাচারের কথা শুনছেন কিন্তু এদেশের জনগণের কথা শুনছেন না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু সংস্কার করেছিলেন। আজকে যে সংষ্কার সেটা হচ্ছে- স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দলীয় ও রাজনীতিকরণ করার কারণে। জিয়াউর রহমান সেই সময়ে বাংলাদেশকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে সংস্কারের ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯ দফার কর্মসূচি দিয়েছিলেন। আজকের রাজনৈতিক কঠিন সময়ে আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার কর্মপরিকল্পনা দিয়েছেন। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষ তার পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার ফিরে পাবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের জনক হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে, তিনি যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন - আমরাও ঠিক একইভাবে এই দেশের মানুষের পাশে থেকে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।
এসময় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, আফাজ উদ্দিন আফাজ, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আলী আকবর আলী, মোতালেব হোসেন রতন, আব্দুস সালাম সরকার, সাজ্জাদ হোসেন, দক্ষিণখান থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক হেলাল তালুকদার, যুগ্ম আহবায়ক আমিরুল ইসলাম বাবলু, দেওয়ান মো. নাজিম উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন জমিদার, পল্লবী থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হোসাইন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ গাজী, মোকছেদুর রহমান আবির, রূপনগর থানা বিএনপি আহবায়ক জহিরুল হক যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জি. মজিবুল হক, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর হোসেন শিশির, ভাষাণটেক থানা বিএনপি আহবায়ক আব্দুল কাদির, পল্লবী থানা ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, রূপনগর থানা বিএনপির ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি শফিকুল ইসলাম মামুন সাধারণ সম্পাদক খোকন মাদবর, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. সেলিম, পল্লবী থানা যুবদলের সভাপতি হাজী নূর সালাম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, রূপনগর থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. নাঈম হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল রূপনগর থানা সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাজেদুল আলম টুটুল, ছাত্রদল রূপনগর থানার সাধারণ সম্পাদক কাওছার মল্লিক প্রমুখ।
আরআর