টলিউডের অভিনেতা মঞ্চু মনোজ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেছেন তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় আক্ষেপের গল্প। তিনি জানান, তেলুগু সিনেমার সুপারহিট ছবি ‘অর্জুন রেড্ডি’ তার হাতছাড়া হওয়া একটি সুযোগ, যা আজও তাকে কষ্ট দেয়। পরিচালক সানদীপ রেড্ডি ভাঙ্গা যখন প্রথম ছবিটির গল্প তাকে শোনান, তখন তিনি আগ্রহী হলেও ব্যক্তিগত কারণে ছবিটি করতে পারেননি। তার ভাষায়, “আজও এই সিদ্ধান্তের জন্য আমার ভীষণ আফসোস হয়।”
২০১৩ সাল থেকেই ‘অর্জুন রেড্ডি’র চিত্রনাট্য বিভিন্ন স্টুডিওতে ঘুরে বেড়ায়। মঞ্চু মনোজ শুরুতে আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে পারেননি। এরপর ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান বিজয় দেবেরাকোন্ডা। আর সেখান থেকেই ছবির ইতিহাস বদলে যেতে শুরু করে।
বিজয় দেবেরাকোন্ডা ‘অর্জুন রেড্ডি’ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে সিনেমাটিকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান। প্রেম, রাগ, হতাশা আর ভেতরের যন্ত্রণা—সবকিছুর মিশেলে তিনি এমন একটি চরিত্র উপস্থাপন করেন, যা দর্শক এবং সমালোচকদের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেলে। যদিও ছবিটি নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি—কেউ একে বলেছে বিষাক্ত পুরুষতান্ত্রিকতার প্রচার, কেউ আবার একে বলেছে বাস্তব প্রেমের খাঁটি রূপ—তবু বিজয়ের অভিনয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি কেউ।
‘অর্জুন রেড্ডি’ শুধু একটি চরিত্র ছিল না, এটি ছিল তেলুগু সিনেমার ধারায় এক মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। ছবিটি এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, তা হিন্দি ও তামিল ভাষায় রিমেক হয়। হিন্দিতে শাহিদ কাপুর ও কিয়ারা আদভানির ‘কবীর সিং’ হয়ে ওঠে সুপারহিট। তামিলে ‘আদিত্য বর্মা’ নামে আসে রিমেক, যেখানে ছিলেন ধ্রুব বিক্রম ও বানিতা সন্ধু। এছাড়াও একই অভিনেতা ধ্রুব বিক্রম অভিনয় করেন ‘ভার্মা’ নামের আরও এক সংস্করণে—যা পরে বাদ দিয়ে আবারও নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়।
ধ্রুব বিক্রম তাই হয়ে উঠেছেন একমাত্র অভিনেতা, যিনি একই চরিত্রে দুইবার অভিনয় করেছেন, যা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বেশ বিরল ঘটনা।
মঞ্চু মনোজ মনে করেন, যদি তিনি এই চরিত্রটি করতেন, তাহলে হয়তো তার ক্যারিয়ার আজ ভিন্ন এক উচ্চতায় থাকত। একইসঙ্গে বিজয় দেবেরাকোন্ডার উত্থানও হয়তো এইভাবে ঘটত না। তবে ভাগ্যের লিখন কেউ মুছতে পারে না। মনোজ বিশ্বাস করেন, হয়তো ভবিষ্যতে পরিচালক সানদীপ রেড্ডি ভাঙ্গার সঙ্গে তার আবারও কাজের সুযোগ হবে—আর তখন তৈরি হবে নতুন কোনো সিনেমাটিক ম্যাজিক।
এইভাবেই ‘অর্জুন রেড্ডি’র অজানা অধ্যায় টলিউডে হয়ে উঠেছে এক কৌতূহল ও সম্ভাবনার গল্প।
আরএ/এসএন