গরু-মহিষ-ছাগলের রাত্রিযাপনে আবাসিক হোটেল

যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহর থেকে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সড়কে ঢুকেই পশুহাটের উত্তর পাশে স্থানীয় আব্দুল মজিদের টিনের ছাউনির বিশাল একটি বাড়ি। ভোরে সূর্য উঠতেই বাড়ির ভেতর থেকে বের করা হয় বড় বড় গরু-মহিষ। বাড়িটিকে ঘিরে গড়ে ওঠা স্থানীয় আব্দুল মমিনের চায়ের দোকানেও সরগরম অবস্থা। আলোচনা বিভিন্ন হাটের পশুর দাম নিয়ে। এমন চিত্র পশুর জন্য গড়ে তোলা আবাসিক হোটেলের।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে হাটে নিয়ে আসা গরু-মহিষ-ছাগলের রাত্রিযাপনের জন্যই মূলত আব্দুল মজিদ গড়ে তুলেছেন আবাসিক হোটেল।

হোটেলটির ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির ঘরে চার সারি গরু রাখা ও খাওয়ার জন্য নান্দা, দড়ি বাঁধার হুক, গোসলের ব্যবস্থা। এছাড়াও খাবার হিসেবে কুড়া, ভুসি, খৈল, খুদের ভাত ও বিচালি।

ফরিদপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী করিম মোড়ল বলেন, “হাটে গরু কেনার পর রাতেই গাড়িতে তুলতে গেলে অনেক ঝামেলা হয়। তাই এই এলাকার হাট থেকে গরু কিনলে সেগুলো আব্দুল মজিদের হোটেলে রেখে পরদিন সকালে গন্তব্যে নিয়ে যাই। এখানে গরুর খাওয়াদাওয়া থেকে গোসল পর্যন্ত সব ব্যবস্থা আছে, এমনকি আমরাও থাকার জায়গা পাই। টাকার বিনিময়ে প্রয়োজনীয় খাবার এখান থেকেই সংগ্রহ করি। দূর-দূরান্তের অনেক ব্যবসায়ীর কাছে এই হোটেলটা শুধুই একটি ব্যবসা নয়, বরং বড় ধরনের সহায়তা।

হোটেলে আসা বাগেরহাটের আব্দুর রহমান বলেন, আমি এই হোটেলের জন্মলগ্ন প্রায় ১০ বছর আগে থেকেই গরু রাখি। বিভিন্ন হাটে গরু বিক্রি না হলে সে সব গরু এই হোটেলে রাখা হয়। এতে গরুপ্রতি ৪০-৫০ টাকা খরচ হলেও অনেক সুবিধা হয়।

পশুর হোটেলটির মালিক আব্দুল মজিদ বলেন, বছর দশেক আগে ১০-১২টি গরু-মহিষ রাখার মতো ছোট একটি হোটেল চালু করি। তবে চাহিদা বহুগুণে বেড়ে যাওয়ায় প্রায় পাঁচ বছর আগে ১৯ শতাংশ জমির ওপরে ৭১টি গরু, মহিষ ও ছাগল রাখার পরিসর নিয়ে হোটেল তৈরি করি। বর্তমানে সপ্তাহের দুই হাটবারকে কেন্দ্র করে ২৫-৩০টি গরু থাকে। এছাড়াও বাইরের জেলা ও স্থানীয় কসাইদের কেনা ৫-৭টি গরু নিয়মিতভাবে থাকে। তবে ঈদের সময় গরুর চাপ বাড়লে ৭১টি ক্যাপাসিটির এই হোটেলে শতাধিক গরু-মহিষ রাখতে বাধ্য হই।

তিনি আরও বলেন, এই হোটেলের মাধ্যমে মাসে অন্তত ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করি। আগামীতে হোটেলটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে।

পিএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্তত ৬০টি গ্রামে শুক্রবার পালিত হবে ঈদুল আজহা Jun 05, 2025
img
ফের অন্তঃসত্ত্বা ‘দৃশ্যম’ ঈশিতা দত্ত, বেবি বাম্প প্রকাশ্যে Jun 05, 2025
img
নিজ দেশেই সমর্থন হারাচ্ছেন নেতানিয়াহু Jun 05, 2025
img
গরুর হাটে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় সেনাবাহিনীর অভিযান Jun 05, 2025
img
টিকিট কেটেও খেলা দেখতে না পারায় ক্ষুব্ধ সমর্থকরা Jun 05, 2025
img
১৮৯৯ সালের পর সবচেয়ে কম জন্মহার জাপানে Jun 05, 2025
img
গোয়ালন্দে মাদকসহ গ্রেফতার ১ Jun 05, 2025
img
গুঞ্জনই সত্যি, সৌদি ক্লাবের কোচ হলেন ইনজাগি Jun 05, 2025
img
বড় পর্দায় আসতে চলেছে ‘ককটেল ২’, শ্যুটিং শুরু কবে? Jun 05, 2025
img
অস্ত্র ছাড়াই দিল্লির আদালতে হত্যা Jun 05, 2025
img
মিনায় হজ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে সৌদি যুবরাজ Jun 05, 2025
img
৮ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন Jun 05, 2025
img
আবার বড় পর্দায় ফিরছে বাহুবলী, অক্টোবরে আসছে গ্র্যান্ড রি-রিলিজ Jun 05, 2025
img
অন্যরকম গল্প নিয়ে ‘দ্য রাজা সাব’ টিজার আসছে ১৬ জুন Jun 05, 2025
img
বরিশালের গরুর হাটে চাঁদা দাবি করে গ্ৰেফতার ৪ Jun 05, 2025
img
১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেবেন ড. ইউনূস , আশা বিএনপি নেতার Jun 05, 2025
img
দীপিকার পাশে মণি রত্নম: "শর্ত নয়, এটা প্রয়োজন" Jun 05, 2025
img
পার্লামেন্টে নেচে-গেয়ে কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ, হেনাসহ তিন কিউই এমপি বরখাস্ত Jun 05, 2025
img
রাশিয়ায় নিষিদ্ধ ব্রিটিশ কাউন্সিল, কারণ কী? Jun 05, 2025
img
৩ বছর পর টেস্ট দলে জায়গা পেলেন জেমি ওভারটন Jun 05, 2025