গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইলিয়াস হোসেনকে (৪২) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ মজিবর রহমান (৬৫) নামে একজনকে আটক করেছে। তিনি যুবলীগ কর্মী সুমনের বাবা।
শনিবার (৭ জুন) সন্ধ্যার দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইলিয়াস হোসেনের মৃত্যু হয়।
এর আগে, শুক্রবার (৬ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র খানাবাড়ি এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। হামলার পর ইলিয়াস হোসেন তার উপর কারা, কিভাবে হামলা করেছে তা নিজেই বলে গেছেন। মোবাইলে ধারণ করা সেই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
নিহত ইলিয়াস মিয়া উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র খানাবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল ব্যাপারীর ছেলে।
তিনি সর্বানন্দ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, রাতে নিজের খামার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইলিয়াসকে পথরোধ করে নিষিদ্ধ যুবলীগের সুমন মিয়া, জুবায়ের ও সাজু মিয়াসহ কয়েকজন। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনা টের পেয়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ইলিয়াসকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহত ইলিয়াসের বড় ভাই মোজাম্মেল হক বলেন, নিষিদ্ধ ফাসিস্ট যুবলীগ কর্মী সুমন মিয়ার নেতৃত্বে ইলিয়াসের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হাত ও পা ভেঙে ফেলাসহ কুপিয়ে ইলিয়াসকে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা যান ইলিয়াস। দীর্ঘদিন ধরেই ইলিয়াসের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল সুমন মিয়াসহ স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের।
আ. লীগের পতনের পর নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকলেও সুমন মিয়া ইলিয়াসকে হুমকি দিয়ে আসছিল। হামলাকারী সুমন মিয়াসহ সকলের বাড়ি একই গ্রাম রামভদ্র খানাবাড়ি। তারা সর্বানন্দ ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। দ্রুত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
হামলার শিকার ইলিয়াসকে উদ্ধারের পর তিনি স্থানীয়দের কাছে হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময়েও কারা, কিভাবে তার ওপর হামলা চালিয়েছেন তাও বলেন তিনি। এ নিয়ে মোবাইলে ধারণ করা ইলিয়াসের বক্তব্যের পৃথক দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমকতা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, 'হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ইলিয়াস। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ সময় নিহতের বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা হয়। তারা এ ব্যাপারে কোনো মামলা এখনও পর্যন্ত দায়ের করেননি। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।'
এসএম/টিকে