চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সড়কে পশুর চামড়া পড়ে থাকা এবং তা থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়ানোর ঘটনা নতুন নয়, তবে এবার বিষয়টি আরও তীব্র আকার নিয়েছে। ঈদের আগের দিন থেকে নগরীর আতুরার ডিপো, আগ্রাবাদ ও চৌমুহনী এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে শত শত চামড়া পড়ে থাকতে দেখা গেছে, যা নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি করছে। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা এ চামড়াগুলো ট্রাকে তুলে নিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দিচ্ছেন।
চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বছর কিংবা এ বছর সরকারি দরের তুলনায় আড়তদাররা অস্বাভাবিকভাবে কম দামে চামড়া কিনছে। এতে করে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ছেন এবং অনেকে বাধ্য হয়ে রাস্তার ওপরই চামড়া ফেলে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বিক্রি না হওয়া চামড়া পুড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাজারে গরুর চামড়া প্রতি পিস ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও আড়তদাররা বিকেল থেকে রাতে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় কিনছে। তবে রাত ৯টার পর থেকে অনেক চামড়া বিক্রেতা চামড়া বিক্রি না করে চলে যাচ্ছেন। ছাগলের চামড়ার বাজার নাই বললেই চলে, যা প্রায় সবই ফেলে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি ঘোষণায় ঈদের আগে চামড়ার দাম কিছুটা বাড়ানো হলেও বাস্তব দরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তেমন সুবিধা পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তদারদের সিন্ডিকেট ও মনগড়া দর কারণে তারা অনেক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমি প্রতি পিস ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় চামড়া কিনেছি, কিন্তু আড়তদাররা ২০০ টাকায় নিতে চাচ্ছে। তারা সিন্ডিকেট করে দর কমিয়ে নিচ্ছে। এতে আমাদের বড় ক্ষতি হচ্ছে।”
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকায় গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। ঢাকার বাইরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ঢাকায় ১,৩৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ১,১৫০ টাকা। কিন্তু সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়ায় চামড়ার বাজারে বিশৃঙ্খলা চলছে।
এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যাতে সড়কে পড়ে থাকা চামড়া ও দুর্গন্ধজনিত সমস্যা থেকে নগরবাসী মুক্তি পায়। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে তদারকি করাও জরুরি মনে করছেন তারা।
আরআর/টিএ