পিতা অটোচালক হলেও পুত্রকে সবসময় ক্রিকেট খেলতে উৎসাহিত করেছেন মির্জ়া মহম্মদ ঘৌস। পিতার অনুপ্রেরণায় ক্রিকেটে নিজের নাম করেছেন মহম্মদ সিরাজ। ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলেছেন। ইংল্যান্ড সফরের দলেও রয়েছেন তিনি। কিন্তু এই সিরাজকেই বিভিন্ন সময় অপমানিত হতে হয়েছে। খারাপ খেললেই শুনতে হয়েছে বিদ্রুপ। অনেকে টেনে এনেছেন তাঁর স্বর্গীয় অটোচালক পিতাকে। সেই সব নিন্দকদের জবাব দিয়েছেন সিরাজ।
ইনস্টাগ্রামে সিরাজ জানিয়েছেন, কী ভাবে তিনি খারাপ খেললেই তাঁর পিতার পেশাকে টেনে আনতেন নিন্দকেরা। তিনি লেখেন, “কে ভেবেছিল এক অটোচালকের ছেলে ভারতের হয়ে খেলবে? যখন ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এসে বলে ওরাও এক দিন ভারতের হয়ে খেলতে চায়, তখন আমার গর্ব হয়। কিন্তু আমাকেও অপমানিত হতে হয়েছে। খারাপ খেললেই অনেকে বলেছে, ‘যাও গিয়ে বাবার মতো অটো চালাও।’ কেন, অটো চালানো কি অসম্মানের?” প্রশ্ন তুলেছেন সিরাজ।
সেই প্রশ্নের জবাবও নিজেই দিয়েছেন সিরাজ। তিনি জানিয়েছেন, কী ভাবে তাঁর পিতা পরিশ্রম করে সংসার চালিয়েছেন। কী ভাবে তাঁকে কঠিন পরিশ্রম করার প্রেরণা দিয়েছেন। সিরাজ লেখেন, “আমার বাবার কাজ অপমানের নয়। ওটা আমার শক্তি। বাবা আমাকে শিখিয়েছে, কী ভাবে মাথা নিচু করে পরিশ্রম করে যেতে হয়। বাবা শিখিয়েছে, কে কী ভাবল, তাতে পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই। সারা দিনের পরিশ্রমের পর বাড়ি ফিরে খিদের জ্বালা আমার জেদ আরও বাড়িয়েছে। যত বার সকলে আমাকে অপমান করেছে, আমি তত পরিশ্রম করেছি। তার পরেও লোকের বিদ্রুপ থামেনি। এখন আমি কাউকে পাত্তা দিই না।”
ভারতের হয়ে খেলে হায়দরাবাদে নিজের বাড়ি তৈরি করেছেন সিরাজ। কিন্তু পিতা সেই বাড়ি দেখে যেতে পারেননি। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ় চলাকালীন মারা যায় মির্জ়া। কোভিডের মধ্যে দেশেও ফিরতে সিরাজ। তাঁর পিতা তাঁকে দেশের জার্সিতে দেখতে চেয়েছিলেন। তাই পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য পরিশ্রম করে গিয়েছেন তিনি। দেশের হয়ে ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতেছেন সিরাজ। তবে এখন ভারতের তিন ফরম্যাটের দলে নিয়মিত নন তিনি। প্রতিযোগিতায় মাঝে মাঝে পিছিয়ে পড়েন। তার মাঝেই ইংল্যান্ড সিরিজ়ের দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি। এই সিরিজ় থেকেই আবার ফর্মে ফেরার লক্ষ্যে সিরাজ।
টিকে/টিএ