সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেতা সমু চৌধুরীর গামছা পরা অবস্থায় গাছের নিচে শুয়ে থাকার ছবি ভাইরালের পর অবশেষে মাজার থেকে পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত সাড়ে ৩টার দিকে সমু চৌধুরীকে তার খালাত ভাই মো. অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস আলম খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শেষ রাতে সমু চৌধুরীকে তার খালাত ভাই অপুর কাছে হস্তান্তর করেছি। এসময় অভিনয়শিল্পী সংঘের কয়েকজন তার সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে বুধবার (১১ জুন) রাত ৯টার দিকে ঢাকা থেকে একজন পাঠাও মোটরসাইকেল রাইডারের মাধ্যমে উপজেলার পাগলা থানাধীন মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে মাজারের পাশে একটি গাছের নিচে গামছা পরে সমু চৌধুরীর শুয়ে থাকার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে প্রথমে খালি গায়ে গামছা পরিহিত অবস্থায় সমু চৌধুরীকে দেখা যায়। পরে অবশ্য টাউজার ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় উপস্থিত স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সামনে তাকে কথা বলতে শোনা যায়। অস্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধারের পর তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে ধারণা করে সবাই।
এদিকে সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে ভিড় জমায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এমতাবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এসময় সমু চৌধুরী সবার সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারারাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে একা একা হাঁটতে হাঁটতে পাশ দিয়ে বয়ে চলা ব্রক্ষপুত্র নদে গোসল করেছেন। গোসল করে গামছা পরে গাছতলায় শুয়ে ছিলেন। এর মধ্যে কে বা কারা ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে।
সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন.এম. আবদুল্লাহ আল-মামুন। সমু চৌধুরী মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা; তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সমু চৌধুরী জানান, তিনি এর আগেও এই মাজারে আরও ৩-৪ বার এসেছেন। তিনি মুখী শাহ্ মিসকিনের ভক্ত। এছাড়া সমু চৌধুরী অন্য সব কথাবার্তাও ঠিকঠাক বলার পর রাতে চিকিৎসক জানিয়ে দেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। তবে সমু চৌধুরীকে কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশন নাটকে দর্শক মাতিয়েছেন এই মঞ্চ অভিনেতা। মাঝে অভিমান করে অভিনয় ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে গিয়েছিলেন। পরে শিল্পী ঐক্য জোটের মাধ্যমে আবারও অভিনয়ে ফিরে আসেন। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সমু চৌধুরী। ১৯৯৫ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘আদরের সন্তান’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। এরপর ‘দোলন চাঁপা’, ‘শত জনমের প্রেম’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘দেশ দরদী’, ‘মরণ নিয়ে খেলা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘যাবি কই’, ‘সুন্দরী বধূ’সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন।
এসএন