ঈদের ছুটি শেষ, অফিস খুলছে রবিবার

ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। আগামীকাল খুলছে অফিস-আদালত। এর মধ্যেই কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। ফলে ঈদে ফাঁকা থাকা ঢাকা এখন পুরোনো চেহারায় ফিরছে।

যাত্রীর পাশাপাশি সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে।


এবার ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয় গত ৭ জুন। এর আগে ৫ জুন থেকে শুরু হয় ঈদের ছুটি। ঈদ উপলক্ষে আগেই ছয়দিনের ছুটি ঘোষণা করে সরকার।

পরে নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন ছুটি অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। তারপর ১৩-১৪ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় সব মিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটি পান চাকরিজীবীরা।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে মানুষের ভিড় ছিল। কাপড়ের ব্যাগ ও কোরবানির মাংস হাতে জীবন-জীবিকার তাগিদে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ফিরছিল চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী, গুলিস্তান, কমলাপুর ও সদরঘাট ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। বাসে ভিড় ও ভাড়া বেশি থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে অনেক যাত্রী।
এদিকে ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ বাড়লেও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঈদে ছুটি না পাওয়ায় এখন ঢাকা ছাড়ছেন।

রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে দেখা যায়, শত শত মানুষ বাস থেকে নামছে। তারপর রিকশা, অটোরিকশা বা লোকাল বাসে করে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে।
যাত্রীর ভিড় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দুই দিন পর মানুষের ফেরার এমন ভিড় থাকবে না।

ট্রাফিক পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের টার্মিনালগুলোতে তত্পর থাকতে দেখা গেছে। দালাল বা পকেটমারদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে যাত্রীদের পরামর্শ দিচ্ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

শুধু বাস টার্মিনাল নয়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ঢাকায় ফেরা লোকজনের ভিড় দেখা গেছে। গতকাল ভোররাত থেকে সদরঘাটে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো ভিড়তে শুরু করে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফিরছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। সকাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের যাত্রীর উপচে পড়া ভিড় ছিল। কেউ এসেছে সপরিবার, কেউ একা। তবে গত দুই দিনের তুলনায় গতকাল যাত্রীর ভিড় একটু বেশি ছিল।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম জানান, সকাল ১০টা থেকে আন্ত নগর ট্রেন কমলাপুরে ঢুকেছে। সব ট্রেন সঠিক সময়ে ও নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছেছে।

কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় ফিরেছেন আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঈদের এক দিন আগে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। আজ (শুক্রবার) ফিরে এসেছি। আসার পথে তেমন যানজট ছিল না।’

মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসা আসমা খাতুন বলেন, ‘আমার স্কুল শুরু হবে রবিবার। তাই ভিড় ঠেলে ফিরতে হলো। বাসে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। ৩০০ টাকার বাসভাড়া ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আমানুর রহমান বলেন, ‘গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার আনন্দের তুলনা হয় না। কিন্তু ঢাকায় ফিরতেই হচ্ছে। কাজ তো থেমে থাকে না। বাসে সিট পেতে কষ্ট হয়েছে। ভাড়াও আগের চেয়ে অনেক বেশি।’

হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আবদুল আওয়াল বলেন, ‘বাড়িমুখী যাত্রীর সংখ্যা এখন কম। আমাদেরও অল্প যাত্রী নিয়েই বাস ছাড়তে হচ্ছে। তবে ঢাকায় যে বাসগুলো ফিরছে, সেগুলোর কোনোটিই খালি আসছে না।’
 
গতকাল বাস টার্মিনালগুলোতে ঢাকা ছাড়া যাত্রীরও কিছুটা চাপ দেখা গেছে। বেশির ভাগ বাসেই যাত্রী অর্ধেকের মতো ছিল। কাউন্টার মাস্টাররা বললেন, অনেকে এখনো ঢাকার বাইরে যাচ্ছে, আবার ফিরেও আসছে।

গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, প্রচুরসংখ্যক লোক ঢাকার বাইরে যাচ্ছে। পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বললেন, ভোরের দিকের বাসগুলোতে যাত্রীসংখ্যা একটু বেশি ছিল। সকাল ১০টার পর থেকে যাত্রীর চাপ কমে যায়।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে নেই যেসব বড় দল Jun 15, 2025
img
নিকোকে ফেরাতে বার্সার সামনে দুই বড় বাধা Jun 15, 2025
img
পঞ্চগড় সীমান্তে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু Jun 15, 2025
img
দেশের বাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম Jun 15, 2025
img
জ্বরে আক্রান্ত মিরাজ, দুশ্চিন্তায় কোচ Jun 15, 2025
কাগজপত্র ছাড়াই চলছিল শাহজাহান খানের গাড়ি, ডাম্পিংয়ে দিল সেনাবাহিনী Jun 15, 2025
img
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে কাউকে হারুন-বেনজির হতে দেব না: নুরুল হক নুর Jun 15, 2025
শিগগিরই ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে ইরান, তেলআবিবেই কি চালাবে পারমাণবিক পরীক্ষা? Jun 15, 2025
img
শাকিব রেগে গেলে ‘বরবাদ’-এর চেয়ে তিনগুণ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে, দাবি বুবলীর Jun 15, 2025
img
সাতক্ষীরায় সাবেক এমপি’র বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র-মাদকসহ আটক ১ Jun 15, 2025
তবে কি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিচ্ছে ইরান? Jun 15, 2025
ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সম্পর্কে যা জানা গেল Jun 15, 2025
img
ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি সড়কে চলতে দেওয়া হবে না : সড়ক উপদেষ্টা Jun 15, 2025
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ১৭ তম ব‍্যাচের সাথে পুলিশের কী ঘটেছিল ? Jun 15, 2025
img
'তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে ড. ইউনূস নিজের ইজ্জত বাঁচিয়েছেন' Jun 15, 2025
img
বর্ডার ২: সোনম বাজওয়া ও দিলজিতের জুটি মাতাবে নতুন গল্প Jun 15, 2025
img
কুমিল্লায় রুবেল হত্যা মামলায় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইমন গ্রেফতার Jun 15, 2025
img
বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোর কাঁধে ইতালির দায়িত্ব Jun 15, 2025
img
সংরক্ষিত নয়, সরাসরি ভোটে সংসদে ১০০ নারী এমপি প্রয়োজন : সারজিস Jun 15, 2025
img
ইরানের যে কৌশল ধরতে ব্যর্থ আমেরিকান রাডার! Jun 15, 2025