বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দু’বার ফাইনাল খেলে হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়েছে ভারতকে। এখন চলছে তৃতীয় আসরের ফাইনাল। এরই মাঝে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই পরবর্তী টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল নিজেদের মাঠে আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে তাদের হতাশ করে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে আগামী জুলাইয়ে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার চলমান ফাইনালের মাঝে লর্ডসে গুঞ্জন উঠেছে ইংল্যান্ড আগামী তিন বছরও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের ফাইনাল আয়োজনের সত্ত্ব পেতে যাচ্ছে। যদিও গত এপ্রিলে বিসিসিআইয়ের সাবেক ট্রেজারার ও আইপিএলের চেয়ারম্যান অরুণ সিং ধুমাল ২০২৭ সালে টুর্নামেন্টটির ফাইনাল আয়োজনে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিসিসিআইয়ের আধিপত্য কারও অজানা নয়। ফলে তাদের চাওয়া অগ্রাহ্য হতে পারে এমন ধারণা খুব কম মানুষেরই রয়েছে। তবে বিসিসিআইয়ের সাবেক সচিব ও বর্তমানে আইসিসির সভাপতি জয় শাহ লর্ডসে চলমান ফাইনাল আয়োজনে মুগ্ধ বলে উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। তারই ধারাবাহিকতায় ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) পরবর্তীতেও ফাইনাল আয়োজনের সত্ত্ব পাবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। যা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আগামী মাসে সিঙ্গাপুরে হতে যাওয়া আইসিসি গভর্নিং বডির বার্ষিক কনফারেন্সে।
এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রের ফাইনাল হয়েছিল ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে, যেখানে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল ভারত। এরপর দ্বিতীয় আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচও হয় ইংলিশ ভেন্যু দ্য ওভালে। সেখানেও রোহিত শর্মার দলের স্বপ্নভঙ্গ হয়। অস্ট্রেলিয়া তাদের হারিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এবার লর্ডসেও ফাইনাল খেলতে নামে। এখন পর্যন্ত গুঞ্জন হিসেবে থাকা আলোচনা চূড়ান্ত হলে, ২০৩১ সাল পর্যন্ত টুর্নামেন্টটির ফাইনাল আয়োজনের সত্ত্ব পেতে পারে ইংল্যান্ড। বিশেষ করে দেশটির টেস্ট ম্যাচের গ্রহণযোগ্যতা এবং দর্শকদের ব্যাপক উপস্থিতি সর্বমহলে প্রশংসা পেয়েছে। এ ছাড়া কন্ডিশনও অনেকটা নিরপেক্ষ হিসেবে ব্যবহারের সামর্থ্য আছে ইসিবির।
এ ছাড়া ভারতের মাটিতে আয়োজন নিয়ে আরেকটি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ পাকিস্তানের। সে কারণে দুই দেশ পরস্পরের মাটিতে ক্রিকেটীয় যাতায়াতও বন্ধ রেখেছে। পাকিস্তান ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে গেলেও, তারা জানিয়ে দিয়েছে পরবর্তী টুর্নামেন্টগুলোয় যেন তাদের ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে রাখা হয়। ফলে পাকিস্তান কিংবা ভারতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজিত না হওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় থাকছে!
এদিকে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের তৃতীয় চক্রে শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া আর কোনো বৈশ্বিক আসরে না জেতা দক্ষিণ আফ্রিকার। দারুণ ব্যাটিংয়ে তারা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অজিদের দেওয়া ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২ উইকেটে ২১৩ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে প্রোটিয়ারা। জয়ের জন্য তাদের আর দরকার ৬৯, হাতে আছে ৮ উইকেট ও দুই দিন।
পিএ/এসএন