বলিউড বরাবরই সমাজের প্রতিফলন — কিন্তু কিছু সিনেমা শুধুই বিনোদন নয়, হৃদয়ের গভীর থেকে বেরিয়ে আসে। বিশেষভাবে সক্ষম চরিত্রদের যেভাবে বলিউড কিছু কিছু ছবিতে সম্মান, অনুভূতি ও সত্যিকার অন্তর্দৃষ্টির সঙ্গে তুলে ধরেছে, তা সত্যিই নজিরবিহীন। তারা করুণা চায়নি — তারা আমাদের ভাবিয়েছে, শিখিয়েছে, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে ভিন্নতা মানেই দুর্বলতা নয়।
১. ঈশান আউয়াস্তি – 'তারে জমিন পর'
ডিসলেক্সিয়া আক্রান্ত এক শিশুর চোখে জগৎ দেখা, যে গ্রেড নয়, ভালোবাসা দিয়ে শেখে। একজন সহানুভূতিশীল শিক্ষকের হাত ধরে সে খুঁজে পায় নিজের আলাদা সত্তা।
২. মিশেল ম্যাকন্যালি – 'ব্ল্যাক'
শ্রবণ ও দৃষ্টিহীন হয়েও এক প্রবল ইচ্ছাশক্তির প্রতীক। তার একাকী কলেজ ইন্টারভিউ আমাদের চোখে জল আনে — নীরবতা দিয়ে কথা বলে এমন চরিত্র বিরল।
৩. রোহিত মেহরা – 'কোই মিল গয়া'
বিকাশে বিলম্বিত হলেও হৃদয়ে বিশুদ্ধ এক শিশু, যে Jaadoo-র সংস্পর্শে হয়ে ওঠে ভারতের প্রথম সুপারহিরো। সরলতা ছিল তার সবচেয়ে বড় শক্তি।
৪. রিজওয়ান খান – 'মাই নেম ইজ খান'
Asperger’s আক্রান্ত রিজওয়ান, যে ভালোবাসার খোঁজে পাড়ি দেয় গোটা আমেরিকা। “আমি সন্ত্রাসবাদী নই” — এই একটি বাক্য ছুঁয়ে যায় কোটি হৃদয়।
৫. লায়লা – 'মার্গারিটা উইথ এ স্ট্র'
Cerebral Palsy আক্রান্ত হয়েও জীবনের প্রতিটি দিক একান্তভাবে অনুভব করা এক সাহসী চরিত্র। সে প্রেম খোঁজে, নিজেকে খোঁজে — এক হাতে স্ট্র দিয়ে অর্ডার করে নিজের স্বাধীনতা।
৬. ঝিলমিল চ্যাটার্জি – 'বরফি!'
অটিজম আক্রান্ত হলেও সে প্রকাশ করে আন্তরিক ভালোবাসা। শব্দহীন ভাষায় সে যা বলে, তা হয়তো অনেক সংলাপেও বলা যায় না।
৭. আওরো – 'পা'
Progeria আক্রান্ত হলেও সে এক আনন্দময়, কৌতূহলী চরিত্র। তার শিশুসুলভ বক্তব্য আমাদের কাঁদায়, আবার হাসায়।
এই চরিত্রগুলো সিনেমার পর্দা ছাড়িয়ে মনের গভীরে পৌঁছেছে। তারা করুণা নয়, সম্মান চেয়েছে। তারা প্রমাণ করেছে, ভিন্নতা মানেই দূরত্ব নয় — বরং সংযোগের এক নতুন ভাষা। বলিউড যখন হৃদয় দিয়ে দেখে, তখন চরিত্রগুলো শুধু অভিনয় নয় — হয়ে ওঠে জীবনের প্রতিচ্ছবি।
এফপি/টিএ