বলিউডের ঝলমলে আলো ছাপিয়ে কিয়ারা আদভানি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এক পূর্ণাঙ্গ অভিনয়শিল্পী হিসেবে। রূপের মোহ নয়, সংবেদনশীলতার ভার বহন করার ক্ষমতা দিয়েই তিনি আজকের কিয়ারা। ১১ বছরের যাত্রায় তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি শুধুই গ্ল্যামার কুইন নন, বরং নিখুঁত শিল্পী, যিনি চোখের ভাষায় বলে দিতে পারেন হাজারো না বলা কথা।
‘যুগ যুগ জিও’ ছবিতে পারিবারিক জটিলতার মাঝেও কিয়ারা দেখিয়েছেন নীরব অথচ শক্ত অবস্থান। নীতু কাপুরের সঙ্গে আবেগঘন দৃশ্য আর বরুণ ধাওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কের অব্যক্ত টানাপোড়েন, সবই সহজেই ছুঁয়ে গেছে দর্শকের মন।
‘গিলটি’তে নাঙ্কি চরিত্রে মানসিক টানাপোড়েন, বিদ্রোহ আর ট্রমার জটিলতা তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন এমন নিঁখুতভাবে যে শেষ দৃশ্যে ভাঙন নয়, তার চোখের গভীর আতঙ্কই দর্শককে কাঁপিয়ে দেয়।
‘শেরশাহ’তে ডিম্পল চিমার চরিত্রে প্রেম আর বিচ্ছেদের বাস্তব বেদনাকে তিনি এমনভাবে জীবন্ত করেছেন, যা যুদ্ধের গল্পের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে। বাসস্টপের বিদায় থেকে চিরবিদায়, সবই দর্শকের চোখে জল এনেছে।
‘কবির সিং’-এ প্রীতি চরিত্রে কিয়ারার সংলাপহীন অভিনয়ই ছিল সবচেয়ে বড় শক্তি। শেষ দৃশ্যে কবিরের পাশে তার নীরব উপস্থিতি যেন এক অনুচ্চারিত আর্তনাদ, যা শব্দের চেয়ে বেশি তীব্র।
‘সত্যপ্রেম কি কথা’ ছবিতে কিয়ারার সবচেয়ে পরিণত আর সাহসী রূপ দেখা গেছে। শারীরিক ও পারিবারিক আবহের সূক্ষ্ম আবেগগুলো তিনি এমনভাবে প্রকাশ করেছেন, যা সাধারণ বলিউড ছবিতে বিরল।
‘লাস্ট স্টোরিজ’-এ অল্প সময়ের গল্পেই কামনা আর সংযমের মিশেল তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন অদ্ভুত বাস্তবতায়। ভিকি কৌশলের সঙ্গে শেষ মুহূর্ত আজও এক নীরব বিপ্লবের উদাহরণ।
‘গুড নিউজ’-এর মতো মজার ছবিতেও কিয়ারা প্রমাণ করেছেন, সংবেদনশীলতা আর মানবিকতা যোগ করে হালকা গল্পকেও গভীর করা যায়। ইনটেনসিটি যে শুধু কষ্ট নয়, ভালোবাসা আর সহানুভূতিতেও থাকে, তিনি তা নিপুণভাবে দেখিয়েছেন।
সব মিলিয়ে বলিউডের যেখানে এখনও রূপ আর ঝলক নিয়ে মাতামাতি, সেখানে কিয়ারা আদভানি গড়ে তুলেছেন নিজের ভিন্ন রাজত্ব, যেখানে আবেগ, সাহস আর চরিত্রের গভীরতা সমানভাবে রাজত্ব করে। চোখের দৃঢ়তা থেকে অশ্রুর ভেতর গলে যাওয়া, সবই অনায়াসে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। আর তাতেই কিয়ারা আজকের বলিউডে এক অনন্য নাম।
এসএম/টিকে