নেতানিয়াহুর দেশে হামলার ছক, নতুন মিলিশিয়া গড়তে ইরানের কাছে বিপুল অর্থ চাইল সিরিয়া!

নিরাপত্তা সূত্র ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালকে জানিয়েছে, সিরিয়ায় আবারও ইরানি প্রভাব প্রতিষ্ঠা করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক কার্যক্রম শুরু করাই তার লক্ষ্য।

জেনারেল ডাল্লা সিরিয়ার চতুর্থ ডিভিশনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন, যা ইরান-সমর্থিত আসাদ সরকারের অভিজাত গার্ড হিসেবে পরিচিত। তিনি ইরানের কাছ থেকে শত শত মিলিয়ন ডলার চেয়েছেন, যাতে আসাদ সরকারের বিলুপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একটি নতুন মিলিশিয়া গঠন করে বর্তমান সরকার ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালানো যায়।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এর নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীদের হাতে আসাদ সরকার পতনের পর ডাল্লাসহ বহু আলাওয়ি নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেবাননে পালিয়ে যান। ডাল্লা মনে করেন, আলাওয়িদের ঐক্যবদ্ধ করতে এবং ইরানের সহায়তায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ একটি সুবর্ণ সুযোগ। তিনি ইরান-সমর্থিত পুরোনো প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করতে চান, বিশেষ করে দক্ষিণ সিরিয়ায়।

সম্প্রতি সিরিয়ার দক্ষিণ দেরা প্রদেশে একটি অস্ত্র গুদামে গ্রাড রকেট উদ্ধার এবং জুন মাসের শুরুতে গোলান মালভূমিতে একটি হিজবুল্লাহ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর হামলা ডাল্লার পরিকল্পনার বাস্তব ভিত্তি থাকার ইঙ্গিত দেয়। ডাল্লার অনুগতদের ‘মিলিটারি কাউন্সিল ফর দ্য লিবারেশন অব সিরিয়া’ নামে একটি গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তবে আলাওয়িদের মধ্যে বর্তমানে বিভক্তি স্পষ্ট। কেউ কেউ ইরান থেকে দূরে সরে সিরিয়ার নতুন শাসনের সঙ্গে সহাবস্থান করতে চান, আবার কেউ কেউ ডাল্লার মতো একটি স্বাধীন আলাওয়ি প্রদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখছেন। অর্থাভাব থাকলেও ডাল্লা এখনো কিছু গোপন অস্ত্রভান্ডারের ওপর নির্ভর করে আছেন। একজন আলাওয়ি নেতা জানান, ডাল্লার মূল লক্ষ্য ১ লাখের বেশি সাবেক আলাওয়ি নিরাপত্তাকর্মীকে আবারও সংগঠিত করা, যারা বর্তমানে নতুন সরকারের চাপের মুখে আত্মগোপনে রয়েছেন।

সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ডাল্লা আসাদের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত নন এবং তার ধর্মীয় প্রবণতা তাকে ইরানের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে। তিনি মনে করেন, আলাওয়িদের টিকে থাকার একমাত্র উপায় হলো দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ এবং সম্ভাব্য বিচ্ছিন্নতা।

তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—ইরান নিজেই এখন সংঘাত, অর্থনৈতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন সামাল দিতে ব্যস্ত। তারা আদৌ সিরিয়ায় নতুন করে অর্থ ঢালবে কি না, তা অনিশ্চিত।

আরএম/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সঞ্জয় কাপুরের শেষযাত্রায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রিয়া, হাসিতে সমালোচিত কারিশমা Jun 21, 2025
img
‘বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক সেমিনার কাল, থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা Jun 21, 2025
img
আরো ৩৯ আমলাকে অপসারণের দাবিতে জুলাই ঐক্যের বিবৃতি Jun 21, 2025
img
কোনো চাপেই মেজাজ হারান না অক্ষয়, জানালেন রহস্য Jun 21, 2025
img
সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়: সিইসি Jun 21, 2025
img
কাঁচামরিচ ১০ টাকায় বিক্রি, লোকসানে কৃষকরা Jun 21, 2025
img
দাপট রয়েছে তাণ্ডবের, নেমে গেছে একাধিক ছবি Jun 21, 2025
img
ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানালেন আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা Jun 21, 2025
img
সাহসিকতার সঙ্গে শক্তি প্রদর্শন করেছে আমাদের জাতি: খামেনি Jun 21, 2025
img
মিথিলার মুখ বসিয়ে চালানো হচ্ছে এডিটেড ছবি, নেপথ্যে এআই প্রযুক্তি Jun 21, 2025
img
ওআইসি সম্মেলনে অংশ নিতে তুরস্কে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Jun 21, 2025
img
রোববার ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন জমা দেবে এনসিপি Jun 21, 2025
img
ইরানে আবাসিক ভবনে হামলা,নিহত ২ Jun 21, 2025
img
আইপিএল মাতানো সুদর্শনের টেস্টে দুঃস্বপ্নের শুরু Jun 21, 2025
img
কারাগারে বিয়ে করলেন নোবেল, দেনমোহর ১০ লাখ টাকা! Jun 21, 2025
img
বিগ ব্যাশে রিশাদ, প্রশংসায় পন্টিং-ফিঞ্চ Jun 21, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থা হারিয়েছি তাদের বিশ্বাস করা যায় না: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Jun 21, 2025
img
হজ শেষে দেশে ফিরলেন ৪০ হাজার ৫২০ হাজি Jun 21, 2025
img
বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান মিলে ত্রিপক্ষীয় প্ল্যাটফর্ম, গঠিত হবে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ Jun 21, 2025
img
'ভক্তদের ভালোবাসাই শক্তি', অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ভাবনার Jun 21, 2025