ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য এখনও সেভাবে জমে উঠেনি দলবদলের বাজার। তবে ঠিকই পরাশক্তি ক্লাবগুলো নিজেদের মতো করে পছন্দের খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ানো শুরু করেছে। যদিও লিভারপুল জার্মান তরুণ ফ্লোরিয়ান ভির্টজের সঙ্গে আরও আগেই প্রাথমিক কথাবার্তা পাকা করে রেখেছিল। এবার এলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বায়ার লেভারকুজেন থেকে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে নিয়েছে অলরেডরা।
২২ বছর বয়সী ভির্টজের সঙ্গে ক্লাবের রেকর্ড সর্বোচ্চ ১১৬ মিলিয়ন পাউন্ডে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৯০৮ কোটি টাকা। আর্নে স্লটের দলটির সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছে ৫ বছরের জন্য, অর্থাৎ ২০৩০ সাল পর্যন্ত। যেখানে তাকে শুরুতে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া হবে। ‘অ্যাড-অনস’ ও আর কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে বাকি ১৬ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে লিভারপুল। ইতোমধ্যে শুক্রবার ভির্টজের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কেবল লিভারপুলই নয়, ব্রিটিশ দলবদল বাজারের অতীত রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে এই জার্মান প্রতিভার দাম। ২০২৩ সালে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজকে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা থেকে ১০৭ মিলিয়ন পাউন্ডে নিয়ে এসেছিল প্রিমিয়ার লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন চেলসি। সেই রেকর্ড ভেঙে একই বছর ১১৫ মিলিয়ন পাউন্ডে ক্লাবটি ময়েসেস কায়কেদোকে নেয়। অ্যানফিল্ডের ক্লাব লিভারপুল এবার তাদেরও ছাড়িয়ে গেছে। যা নতুন মৌসুম শুরুর আগে ক্লাবটি দ্বিতীয় বড় সাইনিং। লেভারকুজেনের হয়ে ১৯৭ ম্যাচে ৫৭ গোল করেছেন ভির্টজ। ২০২০ সালে অভিষেকের পর বুন্দেস লিগায় তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৪টি অ্যাসিস্ট এবং ওপেন প্লে থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫৩টি সুযোগ তৈরি করেন।
এর আগে লিভারপুলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলবদলের রেকর্ড বর্তমানে উরুগুয়ের স্ট্রাইকার ডারউইন নুনিয়েজের। বেনফিকা থেকে এই স্ট্রাইকারকে দলে নিতে ৮৫ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৭৩ মিলিয়ন পাউন্ড) খরচ করেছিল ক্লাবটি। তবে বিবিসি বলছে, ২০১৮ সালে তারচেয়েও বেশি দামে (৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড) ভার্জিল ভ্যান ডাইককে নিয়েছিল লিভারপুল। অলরেড ও প্রিমিয়ার লিগের হয়ে ভির্টজ ইতিহাস গড়লেও, ট্রান্সফার মার্কেটে এরচেয়েও বড় কয়েকটি রেকর্ড এখনও অক্ষুণ্ন আছে।
নেইমার : ২৬২ মিলিয়ন ডলার (২২২ মিলিয়ন ইউরো)
দলবদলের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ২০১৭ সালে বার্সেলোনা থেকে প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার জুনিয়রকে দলে নিয়েছিল। বিশ্ব ফুটবলে হৈ-চৈ ফেলে দেওয়া সেই রেকর্ড এখনও শীর্ষে রয়েছে। এর এক বছর আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পল পগবাকে জুভেন্তাস থেকে দলে নেয় ১১৬ মিলিয়ন ডলারে। যা ছিল ওই সময়ের বিশ্বরেকর্ড।
কিলিয়ান এমবাপে : ২১৬ মিলিয়ন ডলার (১৮০ মিলিয়ন ইউরো)
নেইমারকে নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর পিএসজি এমবাপেকে আরেক ফরাসি ক্লাব মোনাকো থেকে ২১৬ মিলিয়ন ডলারে কিনে নেয়।নেইমারকে রেকর্ডমূল্যে বেচে দেওয়া বার্সেলোনাই গড়ল এর পরের রেকর্ডটি। এক বছর পর তারা লিভারপুল থেকে আরেক ব্রাজিলিয়ান প্লেমেকার কৌতিনিয়োকে নেয় ১৯২ মিলিয়ন ডলারে।
ময়েসেস কায়কেদো : ১৪৬ মিলিয়ন ডলার (১১৫ মিলিয়ন পাউন্ড)
ইকুয়েডরের এই মিডফিল্ডারকে ব্রিটিশ ক্লাবের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৪৬ মিলিয়ন ডলারে ব্রাইটন থেকে ২০২৩ সালে কিনেছিল চেলসি।এ ছাড়া ২০১৯ সালে বেনফিকা থেকে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড জোয়াও ফেলিক্সকে ১৪০ মিলিয়ন ডলারে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ, ২০২৩ সালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে রিয়াল মাদ্রিদ ১৩৯ মিলিয়ন ডলারে জ্যুড বেলিংহাম, ২০১৯ সালে আরেক পর্তুগিজ তারকা আঁঁতোয়ান গ্রিজম্যানকে ১৩৪ মিলিয়ন ডলারে কেনে অ্যাতলেটিকো।
এফপি/টিএ