কানাড়া সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি দীর্ঘ তিন বছর ধরে থিয়েটারে বড় কোনো সাফল্য এনে দিতে পারছে না। একের পর এক সিনেমা মুক্তি পেলেও দর্শকদের মন ছুঁতে পারছে না অধিকাংশ। দর্শক আর থিয়েটারে লাইন দিচ্ছেন না, তাঁরা এখন লগইন করছেন ইউটিউবে। কারণ, বড়পর্দায় যখন সৃজনশীলতার হাহাকার, তখন ইউটিউবেই চলছে নতুন যুগের গল্প বলা।
থিয়েটার হলগুলোতে মুক্তি পাওয়া অধিকাংশ ছবিই দর্শকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। খুব অল্প কিছু সিনেমা—যেমন ‘নিম্মা বাস্তুগলিগে নীভে জবাবদাররু’, ‘নোডিদভারু এনান্তারে’, ‘এদগাইয়ে আপঘাতক্কে কারণ’—সীমিতভাবে আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এসবই ব্যতিক্রম। সাধারণ দর্শক এবং নির্মাতাদের মাঝে দূরত্ব বেড়ে চলেছে প্রতিদিন।
এই প্রেক্ষাপটে ইউটিউব হয়ে উঠেছে কানাড়া সিনেমার সৃষ্টিশীল আশ্রয়। তরুণ নির্মাতারা এখানে তুলে আনছেন নতুন ভাবনা আর ভিন্নধর্মী গল্প। বিখ্যাত তারকাদের সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে চমকপ্রদ শর্টফিল্ম, যা অল্প বাজেটে তৈরি হলেও দর্শককে নাড়া দিচ্ছে গভীরভাবে।
এই বিপ্লবের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন রিষভ শেট্টি, অশ্বিনী পুনীত রাজকুমার এবং রাজ বি. শেট্টির মতো ব্যক্তিত্ব। তাঁরা তাঁদের নিজ নিজ চ্যানেলের মাধ্যমে নতুন নির্মাতাদের সুযোগ করে দিচ্ছেন, সাহসী গল্প বলার প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছেন।
‘শিভাম্মা’ ছবিটি গ্রামবাংলার ব্যঙ্গাত্মক বাস্তবতাকে তুলে এনেছে, যেখানে প্রযোজক ছিলেন রিষভ শেট্টি। আবার ‘ইমাজিন’ নামের এক সংক্ষিপ্ত ছবিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভাবনার খোরাক দিয়েছেন পরিচালক অভয়। ‘কালার্স’ একটি মনকাড়া জীবনধর্মী সিরিজ, এবং ‘চায়ের’ মাধ্যমে রাজ বি. শেট্টি এক ভয়ের গল্প উপস্থাপন করেছেন যা দর্শককে নাড়া দিয়েছে গভীরে।
এই ছবিগুলো শুধু জনপ্রিয়তাই অর্জন করছে না, বরং ভবিষ্যতের কানাড়া সিনেমা কোন পথে এগোবে তা দেখিয়ে দিচ্ছে। ইউটিউব এখন শুধু ভিডিও দেখার মাধ্যম নয়, বরং হয়ে উঠেছে নির্মাতাদের নতুন যাত্রার সূচনা বিন্দু।
থিয়েটার এই মুহূর্তে যেখানে আশ্রয় খুঁজছে, সেখানে ইউটিউব নির্মাতা ও দর্শকের মধ্যে আবার বিশ্বাস গড়ে তুলছে। ঝুঁকি নেওয়ার সাহস, অল্প খরচে গভীর গল্প আর নতুন কণ্ঠস্বরকে সামনে আনার সুযোগ ইউটিউব যেভাবে দিচ্ছে, তা থিয়েটার ইন্ডাস্ট্রি দীর্ঘদিন ধরেই দিতে ব্যর্থ।
যখন বড়পর্দা নড়বড়ে, তখন ছোটপর্দায় নির্মিত হচ্ছে এক গভীর বিপ্লব। এক শর্ট ছবি, এক ক্লিকেই বদলে যাচ্ছে কানাড়া সিনেমার ভবিষ্যৎ।
পিএ/এসএন