এতদিনে যেটা পরিচিত ছিল পাতৌদি ট্রফি নামে, সেটাই ২০২৫ সালে এসে পরিচিতি পেয়েছে অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি নামে। ভারত এবং ইংল্যান্ডের টেস্ট সিরিজ এখন থেকে পরিচিতি পাবে দুই দেশের দুই কিংবদন্তির নামে। সিরিজের নামকরণ নিয়ে আপত্তি শুরুতে না থাকলেও এবার সরব হয়েছেন ভারতের সাবেক ব্যাটিং জিনিয়াস সুনীল গাভাস্কার।
ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও সাবেক অধিনায়ক গাভাস্কার এই নামকরণে খুশি নন, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের নাম কেন শচীন টেন্ডুলকরের আগে, এই নিয়ে বেশ বিরক্ত তিনি।
মুম্বাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিড-ডে-তে নিজের কলামে গাভাস্কার লেখেন, “ইসিবি ট্রফির নাম যেভাবে খুশি রাখতে পারে, তাতে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে বেশিরভাগ ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর কাছেই এটা অস্বস্তিকর যে অ্যান্ডারসনের নাম টেন্ডুলকরের আগে রাখা হয়েছে।”
গাভাস্কারের মতে, টেস্ট এবং ওয়ানডে—দুই ফরম্যাটেই টেন্ডুলকর যা অর্জন করেছেন, তা অ্যান্ডারসনের কীর্তির চেয়ে অনেক উর্ধ্বে। তার ভাষ্য, “শচীন টেন্ডুলকর শুধু ভারতের সেরা ক্রিকেটার নন, তিনিই সর্বাধিক রান এবং সেঞ্চুরির মালিক। ওয়ানডেতেও তার রান সর্বাধিক। অন্যদিকে, অ্যান্ডারসন টেস্ট উইকেট তালিকায় তিনে থাকলেও, ওয়ানডেতে তার রেকর্ড শচীনের ধারে-কাছে নয়।”
বিশ্বকাপ জয়ের প্রসঙ্গটাও সামনে এনেছেন গাভাস্কার, “টেন্ডুলকর বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন, অ্যান্ডারসন তা নন। অ্যান্ডারসনের সাফল্য ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে দুর্দান্ত হলেও, বিদেশের মাটিতে তার সীমিত। বিপরীতে, টেন্ডুলকর সারা বিশ্বের প্রতিটি বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।”
নামকরণের পেছনে ‘বর্ণানুক্রমিক যুক্তি’ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই সাবেক ব্যাটার। তিনি লেখেন, “এই যুক্তি যে ‘A’ আগে আসে ‘T’ এর থেকে, একেবারে অকার্যকর। শচীন যা করেছেন দেশের জন্য, তার তুলনায় অ্যান্ডারসনের অবদান অনেক পিছিয়ে। আমার আন্তরিক অনুরোধ, ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমী এবং মিডিয়া যেন এই ট্রফিকে টেন্ডুলকর-অ্যান্ডারসন ট্রফি বলেই ডাকেন।”
এদিকে, নতুন ট্রফির ঘোষণায় জানানো হয়েছে—সিরিজজয়ী অধিনায়ককে দেওয়া হবে পাতৌদি মেডেল। তবে এই সিদ্ধান্তেও সংশয় প্রকাশ করেছেন গাভাস্কার। তার মতে, যদি সিরিজ ড্র হয়, তাহলে তো কোনো দলই জিতবে না—সেক্ষেত্রে পাতৌদিদের সম্মান কোথায় থাকবে?
তিনি প্রস্তাব দেন, “প্রতিটি টেস্টে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হিসেবে একজনকে পাতৌদি মেডেল দেওয়া হোক এবং পুরো সিরিজের সেরা খেলোয়াড়কে দেওয়া হোক পাতৌদি ট্রফি। এতে করে প্রতিটি ম্যাচেই পাতৌদিদের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা যাবে।”
কেএন/এসএন