মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার আগে ইরান কেন সতর্ক করেছিল?

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান।

কাতারে মার্কিন ঘাটিতে হামলার আগে সতর্ক করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তেহরান কেন আমেরিকাকে আগে থেকেই সর্তক বার্তা দিয়েছিল এখন সেই প্রশ্নই সামনে আসছে।

নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক স্টেফান ফ্রুহলিং বিবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে ইরানের পাল্টা হামলার উদ্দেশ্য ছিল মূলত ‘প্রতীকী’।

তিনি বলেন, এই সতর্কতার মাধ্যমে ইরান বোঝাতে চেয়েছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও বড় সংঘাতে জড়াতে চায় না।

ফ্রুহলিংয়ের মতে, ইরানের পক্ষ থেকে সময় ও লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে আগাম জানানো হয়েছে যাতে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র বেসামরিক বিমান চলাচল নিরাপদে সরিয়ে নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এই সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারকে এক ধরনের বার্তা দেওয়া যে ইরান সংঘাত সীমিত রাখতে চায় শুধু ইসরায়েলের সঙ্গেই। কারণ, সংঘাত বাড়লে তারা সামরিকভাবে পিছিয়ে পড়তে পারে।

নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার এই বিশ্লেষক বলেন, এর আগেও ইরান এমন ‘লোক দেখানো’ হামলা চালিয়েছিল, যেমনটা হয়েছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কাসেম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের পর।

উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।

হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে  হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

আরএম/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ক্লাব বিশ্বকাপে বায়ার্নকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে বেনফিকা Jun 25, 2025
img
সান্তোসেই থাকছেন নেইমার, চুক্তি নবায়ন ডিসেম্বর পর্যন্ত Jun 25, 2025
img
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ন্যায্যভাবে অধিকার ফিরে পেয়েছি: জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল Jun 25, 2025
img
সাবিনাদের প্রসঙ্গে মুখ খুললেন না কোচ ও অধিনায়ক Jun 25, 2025
img
কাঠবাদাম যেভাবে খেলে শরীরে আসে দ্বিগুণ উপকার Jun 25, 2025
img
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসে গর্বিত ট্রাম্প Jun 25, 2025
img
বিজ্ঞানীদের হত্যা করে কর্মসূচি থামানো যাবে না: বিশ্লেষক Jun 25, 2025
img
যুদ্ধবিরতিতে ইরান অনড়, পারমাণবিক কর্মসূচি থামছে না Jun 25, 2025
img
জেলেনস্কি না থাকলেও ইউক্রেন ইস্যু গুরুত্ব হারাচ্ছে না: ন্যাটো Jun 25, 2025
img
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগকে ‘যুগান্তকারী’ বলল বিএনপি Jun 25, 2025
img
বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতায় আগ্রহ চীনের Jun 25, 2025
img
সচিবালয়ে ক্যান্টিন দখল নিয়ে সংঘর্ষ, ছয়জন আহত Jun 25, 2025
img
জাতিসংঘে সরব কাতার, দোহায় তলব ইরানি রাষ্ট্রদূত Jun 25, 2025
img
ইরানের পারমাণবিক কাঠামো অক্ষত, দাবি মার্কিন গোয়েন্দাদের Jun 25, 2025
img
মৃত্যুর গুজব ভুল প্রমাণ করে জনতার মাঝে জেনারেল কানি Jun 25, 2025
img
ইরান যুদ্ধ চলাকালে গাজায় ৮৭০ জনকে হত্যা করল ইসরায়েল Jun 25, 2025
img
থিয়েটারে ফিরছে তেলুগুর ছয় কালজয়ী ছবি Jun 25, 2025
img
হাসনাতের ফেসবুক স্ট্যাটাসে দুদকের ক্ষোভ Jun 25, 2025
img
কোটি টাকার সম্পদ এইচএসসি পাস নেতার, ক্রোকের নির্দেশ আদালতের Jun 25, 2025
img
রহস্যময় লুকে রণদীপ হুডা, আসছে কি নতুন চরিত্র? Jun 25, 2025