প্রথমবারের মতো নিজ দেশে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো জাপান

প্রথমবারের মতো নিজ দেশে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো জাপান। আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) এই পরীক্ষা চালায় দেশটি।

আজ বুধবার (২৫ জুন) মার্কিন বার্তাসংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয় এ তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনকে ঠেকাতে এবং নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে জাপানের সেনাবাহিনী প্রথমবারের মতো নিজ ভূখণ্ডে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে।

জাপানের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত হোক্কাইডো দ্বীপের শিজুনাই অ্যান্টি এয়ার ফায়ারিং রেঞ্জে টাইপ-৮৮ সারফেস-টু-শিপ নামক স্বল্প-পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়। গ্রাউন্ড সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের ১ম আর্টিলারি ব্রিগেড দ্বীপের দক্ষিণ উপকূল থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার (২৪ মাইল) দূরে ক্রুবিহীন একটি নৌকা লক্ষ্য করে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি চালানো হয়।

এর আগে, বিভিন্ন সময় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে জাপান। তবে এবারই প্রথম নিজেদের ভূখণ্ডে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী জানায়, রোববার আবারও পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরিকল্পনা তাদের।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেবল এশিয়ায় উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে তাই নয়, বরং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বিভিন্ন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও সৃষ্টি করছে দেশটির জন্য।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শান্তির সংবিধান তৈরির মাধ্যমে জাপান কেবল আত্মরক্ষার জন্য শক্তি প্রয়োগ করতো। কিন্তু ২০২২ সালে পাঁচ বছরের নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করে সেই নীতি থেকে সরে আসে দেশটি।

এর মূল লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও সামরিক হুমকি মোকাবেলা করা।

যদিও এ লক্ষ্যে জাপান-মার্কিন জোটের ঘনিষ্ঠতার উপরও জোর দেয় দেশটি। এরই জেরে জাপান চলতি বছরের শেষদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা টমাহকসহ দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কাজও শুরু করছে।

অপরদিকে, জাপান নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার (৬২০ মাইল) পাল্লার টাইপ-১২ ভূমি থেকে জাহাজে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করছে, যা টাইপ-৮৮ এর ১০ গুণ বেশি। আর মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে তৈরি করা ট্রাক-মাউন্টেড টাইপ-৮৮ গাইডেড মিসাইলের পাল্লা প্রায় ১শ’ কিলোমিটার বা ৬২ মাইল।

এসব মিসাইলের পরীক্ষা চালানোর জন্য জাপান পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের জনবসতিহীন মিনামিটোরিশিমাতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ফায়ারিং রেঞ্জ তৈরির প্রস্তুতিও নিচ্ছে। যেখানে চলতি মাসের শুরুতে প্রথমবারের মতো দুটি চীনা বিমানবাহী রণতরীকে টহল দিতে দেখা যায়।

আর এ সবই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় আসন্ন উত্তেজনার পূর্বলক্ষণ হিসেবে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

ভাইরে, তুই চাঁদাবাজি করিস না দরকার হলে হাত ধরে বুঝাবো! Jun 25, 2025
img
ভারতীয় গল্পে দক্ষিণ এগিয়ে, বলিউড পিছিয়ে : বললেন পবন Jun 25, 2025
img
বিএনপি শাসক হতে চায় না, সেবক হতে চায়: মো. শাহজাহান Jun 25, 2025
img
২০২৬-এ ‘ভাদা চেন্নাই ২’ নিয়ে ফিরছেন ধনুশ Jun 25, 2025
img
ন্যাটো প্রধানের ‌‘ড্যাডি’ ডাক নিয়ে ট্রাম্পের বার্তা Jun 25, 2025
img
ডার্ক কমেডি থ্রিলার নিয়ে ফিরছেন নীল নিতিন মুকেশ ও দিব্যা খোসলা Jun 25, 2025
img
১৬ জুলাই ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ ঘোষণা Jun 25, 2025
img
মারা যাওয়ার আগে কী খেয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন? Jun 25, 2025
img
পর্দা জুড়ে থাকছে যেসব চমকপ্রদ ছবি-সিরিজ Jun 25, 2025
img
ক্ষমতায় গেলে জামায়াতের প্রতিনিধিরা জনগণের সেবক হবেন : ডা. শফিকুর Jun 25, 2025
img
বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ বের করুন, মেটাকে ড. ইউনূস Jun 25, 2025
img
মালয়ালম সিনেমায় কায়াদু লোহার-টোভিনোর নতুন জুটি Jun 25, 2025
img
রামায়ণে রণবীর কাপুর দেবতা রাম, সাই পল্লবী সীতা, মহা উন্মোচনের প্রস্তুতি Jun 25, 2025
img
ট্রাম্পের দাবি মেনে প্রতিরক্ষায় ব্যয় বাড়াতে সম্মত ন্যাটো দেশগুলো Jun 25, 2025
img
ইরানে ৭ শতাধিক গুপ্তচর গ্রেপ্তার, পাঁচজনের মৃত্যুদন্ড Jun 25, 2025
img
ঢাকায় হবে দক্ষিণ এশীয় উচ্চশিক্ষা সম্মেলন, নেতৃত্বে থাকবে বাংলাদেশ Jun 25, 2025
img
ইরানের হামলায় বেন-গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন ধ্বংসস্তূপ Jun 25, 2025
img
অপ্রয়োজনীয় মেগা অবকাঠামো ভেঙে ফেলা উচিত : বাণিজ্য উপদেষ্টা Jun 25, 2025
img
যে কারণে নিজের ছবিকে ‘ওয়ার্নিং’ বললেন অজয় Jun 25, 2025
img
কবে বসছেন ইরানের সঙ্গে, জানালেন ট্রাম্প Jun 25, 2025