গুগল ওয়ালেট এবং গুগল পে দুটি ভিন্ন পরিষেবা হলেও এদের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, যা প্রায়শই ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। সহজভাবে বলতে গেলে, গুগল ওয়ালেট হলো একটি ডিজিটাল মানিব্যাগ, আর গুগল পে হলো সেই মানিব্যাগ ব্যবহার করে অর্থ প্রদানের মাধ্যম। এই দুটি পরিষেবা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে ডিজিটাল লেনদেনকে সহজ ও নিরাপদ করে তোলে।
গুগল ওয়ালেট মূলত আপনার মানিব্যাগের একটি ডিজিটাল সংস্করণ। এখানে আপনি আপনার ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের টিকিট, বোর্ডিং পাস, লয়ালটি কার্ড এবং এমনকি ডিজিটাল আইডি কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারেন। এর প্রধান কাজ হলো আপনার প্রয়োজনীয় কার্ড ও তথ্যগুলোকে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করে রাখা, যাতে প্রয়োজনের সময় সহজেই ফোন থেকে সেগুলো ব্যবহার করা যায়। অর্থাৎ, ওয়ালেটের মূল উদ্দেশ্য কার্ড বা তথ্যের ডিজিটাল সংগ্রহশালা হিসেবে কাজ করা।
অন্যদিকে, গুগল পে হলো একটি অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা বা পেমেন্ট সিস্টেম যা গুগল ওয়ালেটে সংরক্ষিত কার্ডগুলো ব্যবহার করে লেনদেন সম্পন্ন করে।
যখন আপনি কোনো দোকানে কেনাকাটা করে আপনার ফোনটি পয়েন্ট-অফ-সেল (পিওএস) টার্মিনালে ট্যাপ করে পেমেন্ট করেন (যাকে ‘ট্যাপ টু পে’ বলা হয়), অথবা অনলাইনে কোনো অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে অর্থ প্রদান করেন, তখন গুগল পে এই কাজটি সম্পন্ন করে। এটি আপনার ওয়ালেটে থাকা কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে নিরাপদে বিক্রেতার কাছে অর্থ পৌঁছে দেয়। গুগল পে ছাড়া শুধু ওয়ালেটে কার্ড সংরক্ষণ করে রাখলে সেই কার্ড দিয়ে সরাসরি কোনো দোকানে বা অনলাইনে অর্থ প্রদান করা সম্ভব নয়।
অনেক দেশে এই দুটি পরিষেবাকে একীভূত করে একটি অ্যাপ হিসেবেই ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, যার নাম 'গুগল ওয়ালেট'। এই অ্যাপের মধ্যেই 'গুগল পে'-এর পেমেন্ট প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে।
দেশে গতকালই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে গুগলের ডিজিটাল সেবা 'গুগল পে'। এখন থেকে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা তাদের মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ডটি গুগল ওয়ালেটে সংযুক্ত করে ‘গুগল পে’ ব্যবহার করে দ্রুত, নিরাপদ ও স্পর্শবিহীন পেমেন্ট করতে পারবেন।
ইউটি/এসএন