সিনেমার নাম ‘উদয়পুর ফাইলস’। শুনলেই মনে পড়ে যায় ২০২২ সালের সেই বিভীষিকাময় মুহূর্ত—যখন রাজস্থানের দর্জি কানহাইয়া লাল দিনের আলোয়, দোকানের মধ্যে নৃশংসভাবে খুন হয়েছিলেন। এবার সেই হৃদয়বিদারক ঘটনাকেই কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে একটি চলচ্চিত্র, যা কেবল একটি অপরাধের পুনর্নির্মাণ নয়, বরং একটি সময়, একটি সমাজ ও একটি রাষ্ট্রের বিবেকের জবাবদিহি তুলে ধরতে চায়।
পরিচালক ভরত এস. শ্রীনেট ও প্রযোজক অমিত জানির তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে এই ছবিটি। প্রেজেন্ট করছে জানি ফায়ারফক্স ফিল্মস, আর ডিস্ট্রিবিউশনে রয়েছে রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট। ছবিটির মুক্তির দিন ঘোষিত হয়েছে ১১ জুলাই, ২০২৫। সদ্য প্রকাশিত ট্রেলারে ফুটে উঠেছে সেই অসহ্য তীব্রতা, সেই আতঙ্ক, যা একবার চোখে পড়লে আর উপেক্ষা করা যায় না।
‘উদয়পুর ফাইলস’ শুধু ঘটনা দেখায় না, প্রশ্ন তোলে—কারা দায়ী, কীভাবে এটা ঘটতে দেওয়া হলো, আর হত্যার পর কীভাবে বিস্তার লাভ করল সেই রক্তাক্ত বার্তা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট, বাকস্বাধীনতার সীমা, ধর্মীয় উগ্রতা আর বিচার ব্যবস্থার ধীরগতি—সব কিছু মিলিয়ে ছবিটি এক উত্তপ্ত অথচ প্রয়োজনীয় আলাপ শুরু করতে যাচ্ছে।
অভিনয়ে রয়েছেন বিজয় রাজ, রাজনিশ দুগগল, প্রীতি ঝাংগিয়ানি ও কমলেশ সাওয়ান্ত। চিত্রনাট্য লিখেছেন জয়ন্ত সিনহা ও অমিত জানি, যারা শুধু ঘটনার বিবরণ দেননি, বরং তার আবেগ, প্রতিবাদ ও প্রতিধ্বনি শোনাতে চেয়েছেন দর্শকদের।
এই ছবির সংগীতও ছুঁয়ে যায় হৃদয়—কৈলাশ খের, পলক মুচল ও নন্দিনী শ্রীকরের কণ্ঠে তৈরি হয়েছে এমন সব গান, যেগুলি দৃশ্যের আবেগ বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। মিউজিক এখানে শুধু আবহ নয়, বরং প্রতিবাদের ভাষা।
ছবির নির্মাতারা জানিয়েছেন, এটা কেবল ‘কি ঘটেছিল’ তার সিনেমাটিক উপস্থাপন নয়, বরং ‘কেন ঘটতে দেওয়া হয়েছিল’ সেই কাঠগড়ার এক দলিল। আদালতের কাগজে যেটুকু লেখা থাকে না, সেই আবেগ, সেই নিঃশব্দ চিৎকার তুলে ধরার প্রয়াস এ ছবি।
এই ছবির মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো, বাস্তব কখনও কখনও কল্পনার চেয়েও নির্মম। ‘উদয়পুর ফাইলস’ শুধুই একটি সিনেমা নয়—এটা একটি প্রশ্ন, একটি প্রতিবাদ এবং ইতিহাসের পাতায় স্থান পাওয়ার যোগ্য এক সাধারণ মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর স্মারক।
আরআর/এসএন