ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বর্তমানে ‘পুনর্বিন্যাসের’ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এই সম্পর্ক ‘শীতল’ নয়, বরং পুরোনো কাঠামো থেকে নতুন বাস্তবতায় অভিযোজনের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল আমি বলতে চাই না। আমি বলছি যে, এটা একটা রিঅ্যাডজাস্টমেন্টের (পুনর্বিন্যাস) পর্যায়ে আছে। আমরা এটাকে এভাবে দেখি এবং এ ব্যাপারে আমাদের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। এটুকু বলে আমি এখানে থামব।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় ভারতের সঙ্গে যে ধরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, বর্তমান সরকারের সঙ্গে তা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে সরকার সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে বলেও জানান তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা সত্যটাকে বরং স্বীকার করি যে, পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের যে রকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, ভারত যে রকম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছিল, আমাদের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কটা ঠিক ওই রকম নেই। কাজেই এটাকে আমি রি অ্যাডজাস্টমেন্ট বলছি।
তবে এই পুনর্বিন্যাসের কোন ধরনের-- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কিংবা যোগাযোগ কোন পর্যায়ে রয়েছে-- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সম্পর্কতো সবকিছু মিলিয়েই।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে টানাপোড়েনের সূচনা হয়।
বাংলাদেশের আরেক প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সংঘাত নেই, কিছুই নেই একমাত্র রোহিঙ্গা সমস্যা ছাড়া। রোহিঙ্গা ইস্যুর একমাত্র সমাধান হচ্ছে, তাদের দেশে ফিরে যাওয়া, নিরাপদে থাকবে, স্বাভাবিক জীবন কাটাবে, সেখানে কেউ বাধা দেবে না, অত্যাচার অবিচার করবে না। এটুকু বিশ্ব সম্প্রদায় মোটাদাগে স্বীকার করে।
কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারছি না। এবং নানা চেষ্টা-তদবির চলছে। বাস্তবতাটি মেনে নিই যে, আমরা তাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে কিছু করতে পারিনি। আশা করি, আগামী দিনগুলোতে আমরা সেটা করতে পারব, বলেন তিনি।
কেএন/টিকে