গাজায় ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে বিতরণ করা কিছু আটার বস্তায় মাদকদ্রব্য অক্সিকোডন পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে, এখন পর্যন্ত চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে যারা এসব বস্তার ভেতরে ওষুধটি পেয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্যাবলেট আকারে পাওয়া গেলেও কিছু ক্ষেত্রে ওষুধটি গুঁড়ো করে আটার ভেতরেও মেশানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অক্সিকোডন একটি আফিমজাত মাদক, যা সাধারণত ব্যথা উপশমে ব্যবহৃত হয়। তবে এটি উচ্চমাত্রায় আসক্তিকর এবং শ্বাসকষ্ট, বিভ্রম ও মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
গাজার একাধিক চিকিৎসক ও ফার্মাসিস্ট এই ঘটনাকে ‘সামাজিক ধ্বংসের পরিকল্পিত প্রচেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন। ফার্মাসিস্ট ওমর হামাদ একে ‘গণহত্যার অন্যতম নিকৃষ্ট রূপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। অপরদিকে চিকিৎসক খলিল মাজেন আবু নাদা বলেন, ‘এটি আমাদের সামাজিক চেতনা নিশ্চিহ্ন করার একটি মাধ্যম।’
গাজার প্রশাসন মনে করে, এই পদার্থ সরবরাহে ইসরায়েল সরাসরি জড়িত এবং অবরোধের সুযোগ নিয়ে এসব মাদক ত্রাণ সহায়তার আড়ালে গাজায় পাচার করা হচ্ছে। ত্রাণকেন্দ্রগুলোকে ‘মৃত্যুফাঁদ’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ১৫টি মানবাধিকার ও আইনি সংস্থা জিএইচএফ-এর বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের অভিযোগ তুলে তাদের কার্যক্রম স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ চলাকালে এক মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৫১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা স্বীকার করেছেন, তারা জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্রগুলোর কাছে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছেন। এই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জিএইচএফ কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, মিডল ইস্ট আই, ডেইলি সাবাহ
টিকে