সাধারণ মানুষের পক্ষে এখন আর সিনেমা হলে যাওয়া সহজ নয়- বলে মন্তব্য করেছেন বলিউড তারকা আমির খান। তার সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘সিতারে জামিন পার’ নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে গিয়ে পিঙ্কভিলার এক সাক্ষাৎকারে এমনটা বলেন অভিনেতা।
পাশাপাশি, তিনি সিনেমার বর্তমান অবস্থা নিয়েও তার মতামত প্রকাশ করেন- বিশেষ করে, কিভাবে একটি সময়ের ‘গণমাধ্যম’ হিসেবে পরিচিত সিনেমা এখন আর সেই অবস্থানে নেই।
সিনেমা দেখা ও প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর সময়টা স্মরণ করে আমির বলেন, ‘আমি যখন কাজ শুরু করি, তখন কেবল সিঙ্গেল স্ক্রিন হল ছিল, দিনে চারটা শো হতো।পরে মাল্টিপ্লেক্স আসতে শুরু করে। আজকে মাল্টিপ্লেক্সের সংখ্যা বেড়েছে, আর সিঙ্গেল স্ক্রিন কমে গেছে। এখন আমাদের অধিকাংশ সিনেমা দেখা হয় মাল্টিপ্লেক্সেই।’
এই মাল্টিপ্লেক্সগুলো সাধারণত শহরের ব্যয়বহুল মলগুলোতে অবস্থিত।
তাদের ভাড়া ও কাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এত বেশি যে টিকিটের দাম অনেক বেড়ে যায়। এরপর তিনি বলেন, ‘এই ধরনের মাল্টিপ্লেক্সে টিকিটের দাম এমনই যে অনেকের পক্ষেই তা বহনযোগ্য নয়।’
সিনেমা একসময় ছিল সাধারণ মানুষের জন্য, এখন আর নয়- এমনটা জানিয়ে আমির স্পষ্ট করে বলেন, “এই মাধ্যমকে একসময় ‘মাস মিডিয়াম’ বলা হতো কারণ সাধারণ মানুষ তখন সিনেমা দেখতে পারত। আজকে সেই সুযোগ অনেক কমে গেছে। বিশেষ করে এখন যেহেতু সিঙ্গেল স্ক্রিন হল প্রায় নেই, সাধারণ দর্শকের পক্ষে সিনেমা হলে যাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।”
যোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমি কোনো সমালোচনা করছি না বা নালিশ করছি না, কিন্তু পার্থক্যটা বড় রকমের হয়ে গেছে, এটা আমি বলছি।’
সমাধানের পথ হিসেবে ‘লো-কস্ট সিনেমা হল’ তৈরির কথা উল্লেখ করেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট। বললেন, ‘চীনে ৯০ হাজার স্ক্রিন আছে, আমেরিকায় ৩৫ হাজার— এটা দেখে আমার খুব আফসোস হয়। ভারতের মতো জনবহুল দেশে কেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটা সিনেমা হলও থাকবে না? যদি সস্তায় সিনেমা হল তৈরি করা যায়, সেটা পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্যই লাভজনক হবে।’
অভিনেতা মনে করেন, প্রত্যন্ত জেলা বা গ্রামে কম খরচে সিনেমা হল নির্মাণ হলে আবারও মানুষ হলে গিয়ে সিনেমা দেখার অভ্যাসে ফিরতে পারবে।
তবে কি আমির খান এবার থিয়েটার ব্যবসায় নামছেন? এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘না, আমি থিয়েটার ব্যবসায় আসতে চাই না। কারণ, তাহলে আমার সৃজনশীল কাজের সময় কমে যাবে। তবে আমি যারা এই ব্যবসায় আছেন, তাদের উৎসাহ দিচ্ছি, সাহায্য করছি।’
প্রসঙ্গত, আর এস প্রসন্ন পরিচালিত ‘সিতারে জামিন পার’ মুক্তির পর দুর্দান্ত সাড়া ফেলেছে। ৯ দিনে শুধু ভারতেই সিনেমাটি আয় করেছে ১০৫ কোটিরও বেশি এবং বিশ্বব্যাপী ১৫০ কোটিরও বেশি। সিনেমাটিতে আমির খানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন জেনেলিয়া ডি সুজা। এতে আমির খানকে একজন বাস্কেটবল কোচের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গেছে, যিনি ১০ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষকে প্রশিক্ষণ দেন। ছবিতে অনেক নতুন মুখের অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে, যারা তাদের চরিত্রগুলোকে জীবন্ত করে তুলেছেন।
কেএন/টিকে