লিওনেল মেসির শৈশবের ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ, যে ক্লাবের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে ফুটবলের পথে যাত্রা শুরু করেন তিনি। বার্সেলোনার লা মাসিয়ায় যোগ দেওয়ার আগে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত নিওয়েল’স বয়েজেই ছিলেন মেসি। এরপর বার্সেলোনার হয়ে লম্বা একটা সময় খেলেছেন তিনি। বার্সার জার্সিতেই তিনি অর্জন করেন তারকা খ্যাতি। আর মেসির হাত ধরেই দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা।
বলতে গেলে, ফুটবলের জগতে সব অর্জনই আছে লিওনেল মেসির। ক্লাব কিংবা জাতীয় দল, তার ক্যারিয়ারে অপূর্ণ বলে কিছু নেই। ক্লাবের হয়ে অসংখ্য শিরোপা জয়ের পর আর্জেন্টিনার হয়ে দুবার জিতেছেন কোপা আমেরিকার শিরোপা। একবার ফিনালিসিমার শিরোপা জেতেন তিনি। সবশেষ ২০২২ সালে জেতেন বিশ্বকাপ।
সাফল্যের বৃত্ত পূরণ করা মেসিকে নিয়ে দারুণ গর্বিত তার শৈশবের ক্লাব নিউওয়েলস। সম্প্রতি মেসির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেদের স্টেডিয়ামের নতুন একটি স্ট্যান্ডের নাম তার নামে করার ঘোষণা দেয় ক্লাবটি। কিন্তু নিওয়েল’স কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি নন ক্লাবটির আরেক কিংবদন্তি ফুটবলার হুয়ান মানুয়াল লিয়োপ।
১৯৮১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত নিউওয়েলস-এ ছিলেন আর্জেন্টিনার সাবেক এই ফুটবলার। লিয়োপ এই ক্লাবে থাকাকালীন (১৯৮৭-১৯৯২) নিজেদের সোনালী সময় পার করেছে রোজারিওর এই ক্লাবটি। সে সময়ে আর্জেন্টাইন শীর্ষ লিগে ৩টি শিরোপাও জিতেছিলো তারা। ক্লাবকে এমন সাফল্য এনে দেওয়া লিয়োপ মেসির নামে স্ট্যান্ড করার বিষয়টি যেনো মেনে নিতে পারছেন না।
আর্জেন্টিনার রেডিও ২-এর ‘জ্যাম্পিং স্পোর্ট’ অনুষ্ঠানে লিয়োপ বলেছেন, ‘সারা পৃথিবী এখন বিপণনের সঙ্গে চলে। মেসিকে নিয়ে আমরা বিতর্ক করবো কেন? ও তো বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। আমার প্রশ্ন হলো, মেসি নিউওয়েলস-এর জন্য কী করেছে?’
লিয়োপ আরও বলেন, ‘আমার মতে, যারা কোনো জায়গায় ইতিহাস গড়েন, তাদের সেই সম্মান পাওয়ার একটা কারণ থাকে। আমি চাই না ওখানে ওখানে একটা গাছ পর্যন্ত বসানো হোক। নিউওয়েলস-এর ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ আছেন, যারা অনেক কিছু করেছেন, বহুবার দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন (তাদের নামে রাখা হোক)। আমি এই সিদ্ধান্তের (মেসির নামে স্ট্যান্ড) সঙ্গে একমত নই।’
লিয়োপ দাবি করেছেন, নিউওয়েলস-এ এমন অনেকেই আছেন, যাদের অবদান মেসির চেয়ে বেশি। ‘এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা নিউওয়েলস-এর জন্য জীবন দিয়েছেন। যেমন মাঠকর্মী, যিনি অনেক বছর ধরে এখানে আছেন, আর এখন তার ছেলেও একই কাজ করছে। আমি বলছি না তিনিও একটা গ্যালারি পাওয়ার যোগ্য, কিন্তু অন্তত যেই দরকা দিয়ে তারা স্টেডিয়ামে ঢোকেন, সেটার নাম তো হতে পারতো। এ ধরণের মানুষদেরই ক্লাবের প্রতি সত্যিকারের মমত্ববোধ থাকে, এবং তারাই প্রতিষ্ঠানটির জন্য কিছু করে গেছেন।’
নিউওয়েলস-এর হয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। তার নামের রাখা হয়েছে স্ট্যান্ডের নাম। শুধু মেসি নয়, ম্যারাডোনার নামে স্ট্যান্ড রাখার সমালোচনাও করেছেন লিয়োপ। ‘একই কথা ম্যারাডোনা স্ট্যান্ড নিয়েও বলবো। এগুলো শুধুই বিপণন।’
আরআর