২০২৫ সাল রাশ্মিকা মন্দানার জীবনে যেন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। দক্ষিণ ভারতীয় ছবির সীমা পেরিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন এক প্যান-ভারতীয় তারকা। বক্স অফিসে ঝড় তোলা ‘কুবেরা’ ছবির ডাম্পইয়ার্ড দৃশ্যেই তিনি প্রমাণ করেছেন নিজের অভিনয়ক্ষমতা। দর্শক থেকে সমালোচক—সবাই মুগ্ধ তাঁর সহজাত অভিব্যক্তি আর নিখুঁত প্রকাশে। তবে শুধু প্রতিভাই নয়, এই সাফল্যের আসল ভিত্তি তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত চরিত্র নির্বাচন।
অনেক অভিনেত্রী যেখানে নিরাপদ চরিত্রে আটকে থেকে ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছেন, রাশ্মিকা সেখানে একের পর এক ভিন্নরকম চরিত্রে নিজের উপস্থিতি জাহির করছেন। তিনি স্পষ্ট করে বুঝেছেন, শুধু গ্ল্যামার নয়, গল্পই আসল নায়ক। তাই ‘কুবেরা’-র মতো বাস্তবধর্মী সামাজিক ড্রামা থেকে শুরু করে ‘মাইসা’-র উপজাতীয় সংস্কৃতিভিত্তিক অ্যাকশন এপিক, আবার ‘থামা’ আর ‘ককটেল টু’-এর মতো হালকা বিনোদনমূলক ছবিতেও থাকছেন সমান সাবলীল।
এছাড়াও আছে ‘দ্য গার্লফ্রেন্ড’ নামের আবেগনির্ভর টেলুগু ড্রামা। ভাষা বা ঘরানা নয়, তাঁর নজর থাকে চরিত্রের গভীরতা আর গল্পের প্রাসঙ্গিকতায়। এ কারণেই তিনি আজ ভারতের শীর্ষ প্যান-ইন্ডিয়া অভিনেত্রীদের একজন।
এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কিছু সুস্পষ্ট কারণ। তিনি গ্ল্যামারকে কখনো প্রাধান্য দেন না গল্পের চেয়ে। চরিত্র অনুযায়ী নিজের লুক বা অভিব্যক্তিকে অগোছালো করতেও দ্বিধা করেন না। আবার বেছে নেন এমন পরিচালক ও কনসেপ্ট, যেটি শুধু তাৎক্ষণিক নয় বরং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে তাঁর ক্যারিয়ারে।
অন্যদিকে তাঁর সমসাময়িক অনেক অভিনেত্রী যেখানে জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও ধীরে ধীরে থেমে যাচ্ছেন। পুজা হেগড়ে নিজের সৌন্দর্য আর উপস্থিতি দিয়ে নজর কেড়েছেন ঠিকই, কিন্তু সাম্প্রতিক ছবিগুলোতে তাঁর চরিত্রগুলো হয়ে গেছে একঘেয়ে। কীর্তি সুরেশ ‘মহানতী’-তে অসাধারণ অভিনয়ের পরও পরের ছবিগুলোর মান ঠিক রাখতে পারেননি। শ্রীলীলার ক্ষেত্রে রয়েছে দুর্দান্ত নাচ আর স্টার পাওয়ার, কিন্তু চরিত্রে বৈচিত্র্য নেই বললেই চলে।
রাশ্মিকা ঠিক এই ফাঁকটাই বুঝে নিয়েছেন। তাই এক ছবিতে ব্যর্থ হলেও তাঁর চরিত্র বেছে নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা থামে না। এভাবেই তৈরি হচ্ছে তাঁর শক্তিশালী ব্র্যান্ড।
রাশ্মিকা মন্দানা কেবল অভিনেত্রী নন, তিনি নিজের ক্যারিয়ারকে সুচারু পরিকল্পনায় গড়ে তুলছেন। যেখানে অনেকেই সহজ জনপ্রিয়তায় আটকে যাচ্ছেন, রাশ্মিকা সেখানে নিজের জন্য তৈরি করছেন এক নতুন, শক্তিশালী ও প্রভাবশালী উত্তরাধিকার।
এফপি/এসএন