বলিউডে মাঝেমধ্যে এমন কিছু গুজব ছড়ায় যা শোরগোল ফেলে দেয়। সম্প্রতি ঠিক তেমনই এক আলোচনার জন্ম দিল ‘রং দে বসন্তি’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র ডিজে নিয়ে। শোনা যাচ্ছিল, নাকি প্রথমে সেই চরিত্রের জন্য সাইন করা হয়েছিল মনোজ বাজপেয়ীকে, পরে আমির খান এলেন ছবিতে। এই দাবি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বিস্ময় ছড়ায়, আলোচনাও জমে ওঠে।
গুজবের সূত্রপাত হয় সিনেমার চিত্রনাট্যকার কমলেশ পাণ্ডের এক সাক্ষাৎকার থেকে। তিনি বলেন, “ছয় বছর ধরে আমরা চিত্রনাট্য নিয়ে ঘুরছিলাম। প্রথমে মনোজ বাজপেয়ীকে সাইন করা হয়েছিল। পরে আমির স্ক্রিপ্ট শুনেই রাজি হয়ে যান।” এই বক্তব্য দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ‘রং দে বসন্তি’র ভক্তদের কাছে তো কথাই নেই—আমির খানের ডিজে চরিত্র একেবারে কালজয়ী, সেই চরিত্রে অন্য কাউকে ভাবাই যেন অসম্ভব।
গোটা বিতর্কে সবচেয়ে জোরালো ও মজার উত্তর এল মনোজ বাজপেয়ীর কাছ থেকে। নিজের সেই স্বভাবসুলভ ঠান্ডা, কিন্তু সূক্ষ্ম কৌতুকভরা ভঙ্গিতে তিনি নেটমাধ্যমে লিখলেন, “মানে, কিছুও!” সঙ্গে যোগ করলেন, “কে সেই প্রযোজক যে এটা বলেছে? নাম তো বলো! সবাই এখন খালি লোটা হয়ে বসে আছে।”
কোনো আনুষ্ঠানিক বা রাগী প্রতিবাদ নয়—বরং সরস ব্যঙ্গেই তিনি গুজবকে উড়িয়ে দিলেন। বোঝালেন, এই ধরনের খবর নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। Laughing Colours নামের পেজ থেকে এই পোস্টটি ছড়ায়, যারা পরে জানায় যে তারা আসলে কমলেশ পাণ্ডের বক্তব্যই কোট করেছিল এবং তারাও মনোজের বড় ভক্ত।
তবে গুজবের বাইরেও সত্যটা খুব স্পষ্ট—‘রং দে বসন্তি’ ছবির ডিজে চরিত্র আজও এক আইকনিক সৃষ্টি। ভারতের অন্যতম সাহসী দেশাত্মবোধক সিনেমা হিসেবে ২০০৬ সালে মুক্তির পর থেকে ছবিটি দর্শক হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেলেছে। আর আমির খানের অভিনয় ছাড়া সেই চরিত্র ভাবাই মুশকিল।
অন্যদিকে মনোজ বাজপেয়ী নিজের ক্যারিয়ারে একেবারে আলাদা উচ্চতায় পৌঁছেছেন। তিনি যে নিজেই এক অনন্য অভিনেতা, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ সিরিজে শ্রীকান্ত তিওয়ারি চরিত্রে তার অভিনয় ইতিমধ্যে কাল্ট হয়ে উঠেছে, আর সামনে আসছে বহুল প্রতীক্ষিত নতুন সিজন।
শেষ পর্যন্ত এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয়—গুজব আসে, যায়, কিন্তু সত্যিই শক্তিশালী শিল্পীরা নিজের কাজ দিয়েই নিজের অবস্থান তৈরি করে নেন। বক্তৃতা নয়, ব্যঙ্গেই যে কখনো কখনো সবচেয়ে স্পষ্ট উত্তর মেলে, তা আবারও প্রমাণ করলেন মনোজ বাজপেয়ী।
কেএন/টিকে