ঘ্রাণের জগতে ঢুকে পড়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ম্যানহাটানের এক ল্যাবে গ্রীষ্মকালীন প্লামের ঘ্রাণ এখন রূপ নিচ্ছে ডিজিটাল কোডে। ‘অসমো’ নামের একটি স্টার্টআপ চেষ্টা করছে এআই দিয়ে ঘ্রাণ বিশ্লেষণ করে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় কাস্টমাইজড পারফিউম তৈরি করতে।
সাধারণত একেকটি পারফিউম বাজারে আনতে সময় লাগে ছয় থেকে ১৮ মাস। সেখানে অসমো এখন গ্রাহকের অনুভূতির বর্ণনা অনুযায়ী মাত্র দুই দিনের মধ্যেই পাঠাতে পারছে ঘ্রাণের নমুনা। প্রথাগতভাবে পারফিউম তৈরিতে সময় লাগে কারণ, ঘ্রাণের ভারসাম্য, স্থায়িত্ব, ছড়িয়ে পড়ার ধরনসহ নানা বিষয় বিচার করে তবেই নেওয়া হয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অনেক উপাদান আবার চাষ করতে লাগে বছর বছর।
এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া কমাতে, অসমো বিভিন্ন ঘ্রাণকে রূপ দিয়েছে কোডে। এসব ডেটাসেটে ট্রেইন করা হয়েছে ঘ্রাণ-সংবেদনশীল এআই, যা যেকোনো ঘ্রাণের অণু বিশ্লেষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি করতে পারে মিলনসই পারফিউম। শুধু অসমো নয়, বিশ্বের চার সুগন্ধি জায়ান্ট—ডিএসএম-ফার্মনিক, জিভুডান, আইএফএফ ও সিমরাইজ—সবাই এখন এআই ব্যবহার করছে হেয়ার স্প্রে, সাবান, ক্লিনার থেকে শুরু করে বিলাসবহুল পারফিউম তৈরিতে।
তবে প্রযুক্তির এই ঝলকানির মাঝেও আছে বিতর্ক। নিউইয়র্কের সুগন্ধি পরিবেশক ‘স্টেলে’র সহস্বত্বাধিকারী বলেন, অনেক ব্র্যান্ড বাস্তবে এআই দিয়ে পুরোনো কাজ কপি করলেও দাবি করে নতুনত্বের। অথচ, একটি পারফিউম হলো সময়, শ্রম আর সৃষ্টিশীলতার ফসল—যা বোতামে চাপ দিলেই মেলে না। এআই হয়তো সময় বাঁচায়, খরচ কমায়। তবে ঘ্রাণের জগতে মানুষের অনুভূতি আর কল্পনার ঘ্রাণ এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
এসএন