সমুদ্রগামী জাহাজ মালিকের দেশের তালিকায় ৩৫তম স্থানে বাংলাদেশ

সমুদ্রগামী জাহাজ মালিকের দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা আঙ্কটাডের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ১০২টি পণ্যবাহী মাদার ভ্যাসেল এবং ১৭০টি মাছ ধরার ফিশিং ভ্যাসেল জাহাজ নিয়ে সবশেষ তালিকায় বাংলাদেশের স্থান হয়েছে ৩৫তম। অবশ্য বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির গুরত্বপূর্ণ এই তালিকায় ৩৫টি দেশকেই স্থান দেয়া হয়।

স্বাধীনতার পর মাত্র দুইটি জাহাজ নিয়ে সমুদ্র বাণিজ্য শুরু করেছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। আর বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশ জাহাজের মালিক হয়েছিল বিগত ২০১৩ সালে। এরমধ্যে মাত্র ১২ বছরে বাংলাদেশি মালিকানাধীন পণ্যবাহী মাদার ভ্যাসেল রয়েছে ১০২টি।

এ অবস্থায় জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনাইটেড নেশান লিডিং ইনিস্টিটিউশন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আঙ্কটাড) রিপোর্টে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশ শীর্ষ ৩৫ জাহাজ কেনার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিকভাবে শিপ ওনিং কান্ট্রি হিসেবে পরিচিতি লাভ করব।

আঙ্কটাডের তালিকা অনুযায়ী, বিশ্ব সমুদ্র বাণিজ্যে দশমিক ২ শতাংশ হিস্যা রয়েছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজগুলোর। এসব জাহাজ দিয়ে প্রতি বছর ৫২ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন পণ্য বহন করা হয়। মূলত চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে দেশীয় মালিকানাধীন জাহাজের হাজার কোটি টাকার এই বাণিজ্য।

আর তাই এই জাহাজ শিল্পের বিকাশে বন্দরকে আরও বেশি সক্রিয় করার কথা জানালেন বন্দর চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ট্রেড রুটের পরিধি বাড়বে। এর সঙ্গে বাড়বে কার্গো প্রবাহ। পাশাপাশি শক্তিশালী হবে বৈশ্বিক বাণিজ্য যোগাযোগ।

আঙ্কটাডের তালিকায় স্থান পাওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন বাণিজ্যে এখন বাংলাদেশি মালিকদের যেমন কদর বাড়বে, তেমনি বিদেশি ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশি জাহাজ ভাড়া নিতে আর দ্বিধা করবে না। অবশ্য পণ্য নিয়ে আসা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বার্থিং সুবিধা দিতে আগেই চট্টগ্রাম বন্দরে ফ্ল্যাগ ভ্যাসেল নীতিমালা কার্যকর রেখেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, বর্তমানে যাদের বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ ক্যারিয়ার আছে, তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বার্থিং সুবিধা পায়। আরও জাহাজ যুক্ত হলে, সেগুলো আরও সুযোগ-সুবিধা পাবে।

তবে বাংলাদেশি মালিকানাধীন হলেও বর্তমানে ৬টি জাহাজ বাংলাদেশি পতাকার পরিবর্তে বিদেশি পতাকা নিয়ে পণ্য পরিবহন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আঙ্কটাডের রিপোর্টে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে সমানতালে এগিয়ে চলার পাশাপাশি আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে বাংলাদেশ। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আঙ্কটাডের রিপোর্টে জাহাজ মালিক দেশগুলোর মধ্যে এখন ৩৫তম বাংলাদেশ। তবে সামান্য কিছু জটিলতা রয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে তালিকায় বাংলাদেশর স্থান ২০তম হয়ে যাবে। এমনটিই বলছেন জাহাজ ব্যবহারকারীরা।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ Aug 17, 2025
বরিশালে ক্রিকেট বিপ্লবের ছোঁয়া, কোচ প্রশিক্ষণে প্রাণচাঞ্চল্য! Aug 17, 2025
img
গণপিটুনির শিকার সেই রিকশাচালকের জামিন, বাধা নেই কারামুক্তিতে Aug 17, 2025
'খেলার মধ্যে কোন ধরনের রাজনীতি আনা যাবেনা Aug 17, 2025
জুনের ১২ দিনের যুদ্ধের চেয়ে ভয়াবহ প্রতিশোধের আভাস দিলো ইরান Aug 17, 2025
img
বার্তা ফাঁসকারীকে খুঁজছে সিএমপি Aug 17, 2025
img
সরকার কারও কথায় কাজ করে না, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন: রিজওয়ানা হাসান Aug 17, 2025
img
সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত Aug 17, 2025
img
আমি ভীষণ রোমান্টিক মানুষ, এখনও প্রেমে বিশ্বাস করি: মালাইকা Aug 17, 2025
img
জেলেনস্কির সঙ্গে ইউরোপীয় নেতাদেরও হোয়াইট হাউসে ডেকেছেন ট্রাম্প Aug 17, 2025
img
অবসর নেওয়ার পরামর্শে কি বললেন কিং খান ? Aug 17, 2025
img
প্রাথমিকের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের বিশেষ রুটিনে পাঠদানের নির্দেশ Aug 17, 2025
img
হাওরে উড়াল সড়কের কাজে আরও গতি আসবে : উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন Aug 17, 2025
img
লিখিত আদেশ নেই, যে নীতিতে সরানো হলো রাষ্ট্রপতির ছবি Aug 17, 2025
img
পাথর লুটের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজস বা নীরবতা ছিল: রিজওয়ানা Aug 17, 2025
img
এবার সালমানের ঘনিষ্ঠ এলভিস যাদবের বাড়িতে হামলা Aug 17, 2025
img
শাহরুখ স্টাইলে এন্ট্রি পুত্র আরিয়ানের, নেটফ্লিক্স শো-র দুর্দান্ত টিজার Aug 17, 2025
img
আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাস Aug 17, 2025
img
এশিয়া কাপের আগে ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্য সুখবর! Aug 17, 2025
img
জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে হতাশ এনসিপি Aug 17, 2025