দেশপ্রেম, সিনেমা, আর রাজনৈতিক বিতর্কের মাঝে যেন বারবার আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসছেন পাঞ্জাবি সুপারস্টার দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ। তাঁর অভিনীত ছবি ‘সর্দারজি ৩’-এর মুক্তির মুখে যখন দেশজুড়ে উত্তাল প্রতিবাদ, তখন সেই ঝড়েরই উত্তরে নিজের চিরচেনা স্টাইলে জবাব দিলেন এই পপস্টার।
ঘটনার শুরু পাক শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে। দিলজিৎ দোসাঞ্ঝের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একাধিক পাক অভিনেতার সঙ্গে একসঙ্গে পর্দায় কাজ করেছেন। সেই সূত্রেই শুরু হয় প্রশ্ন—এই কি তবে দেশভক্তি? এমনকি বিজেপি ঘনিষ্ঠ ফিল্ম সংগঠন ‘চিত্রপট কামগর অঘোরী’ তাঁকে সরাসরি বয়কটের ডাক দেয়। চলতে থাকে সামাজিক মাধ্যমে ট্রোল আর ব্যঙ্গ।
সবচেয়ে বড় গুঞ্জন—দিলজিতকে নাকি বাদ দেওয়া হয়েছে জেপি দত্তার ঐতিহাসিক যুদ্ধ-চলচ্চিত্রের দ্বিতীয় পর্ব ‘বর্ডার ২’ থেকে। দেশাত্মবোধক সিনেমা থেকে এক পাক-সম্পৃক্ত অভিনেতাকে সরিয়ে দেওয়ার এই খবরে যেন একদল স্বস্তি পায়, আবার অন্য একদল ক্ষুব্ধ হয়।
কিন্তু দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ বরাবরের মতো এবারও মুখে কিছু না বলে সরাসরি কাজ দিয়েই জবাব দিলেন। এক ভিডিও পোস্ট করেন নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে। যেখানে দেখা যায়, ‘বর্ডার ২’-এর সেটে চলছে শুটিং, ক্যামেরার পেছনে ব্যস্ত দিলজিৎ। ক্যাপশনে লিখেছেন শুধু ছবির নাম। ব্যাস, এই এক শব্দেই যেন নিভে গেল পুরো বিতর্কের আগুন।
ভিডিওটির সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অংশ—পেছনে বাজছে সেই কালজয়ী গান ‘সন্দেশে আতে হ্যাঁ’। ১৯৯৭ সালের জেপি দত্তার পরিচালিত মূল ‘বর্ডার’ সিনেমার হৃদয়বিদারক মুহূর্তের সেই সুর যেন আবার ফিরিয়ে আনল যুদ্ধের আবেগ, দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা।
এই ভিডিওতেই দিলজিৎ বুঝিয়ে দিলেন—যাঁরা তাঁকে দেশদ্রোহ বলে আঙুল তুলছেন, তাঁদের মঞ্চে তিনি নিজের কাজেই পাল্টা জবাব দিতে জানেন। তিনি এখনও ‘বর্ডার ২’-এর অংশ, এবং সিনেমার মাধ্যমে আবারও ফিরিয়ে আনতে চলেছেন যুদ্ধের গৌরবগাথা।
দর্শকের একাংশ বলছেন, বারবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেও, দিলজিতের সততা ও শালীন প্রতিরোধই তাঁর জনপ্রিয়তার আসল কারণ। ‘সর্দারজি ৩’ কিংবা ‘বর্ডার ২’—প্রতিটি প্রজেক্টেই যেন নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করে তুলছেন এই পাঞ্জাবি সুপারস্টার।
এখন প্রশ্ন একটাই—এই সব বিতর্ক পেরিয়ে কি দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ আরও একবার প্রমাণ করবেন, তিনি শুধু এক জন গায়ক বা অভিনেতা নন, বরং নিজের আদর্শে দৃঢ় এক শিল্পী? সময়ই দেবে সেই উত্তর।
এসএন