আগেই আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশী। এমনকি সবচেয়ে কম বয়সে সর্বশেষ আইপিএলে খেলতে নেমে তিনি ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েন। বৈভবের সেই ঝোড়ো ব্যাটিং এখন ভারতীয় জার্সিতেও অব্যাহত আছে। ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলতে নেমে তিনি একটি বিশ্বরেকর্ড প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছিলেন, তবে নাজমুল হোসেন শান্ত’র সেই কীর্তি অক্ষুণ্ন আছে এখনও।
ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে গতকাল (বুধবার) নর্দাম্পটনে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে খেলেছে ভারতীয় যুব দল। স্বাগতিকদের ২৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তারা ৪ উইকেটে জিতেছে। সফরকারী ভারতের হয়ে ৮৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন ওপেনার বৈভব সূর্যবংশী। তিনি ৩১ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও ৯ ছক্কায় সাজিয়েছেন। যুব ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে এক ইনিংসে এটি সর্বোচ্চ ছয়ের রেকর্ড।
এর আগে ভারতের যুব ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা ছিল ৮টি। ২০০৯ সালে হোবার্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ১৫১ রানের ইনিংসে ৮ ছক্কা মেরেছিলেন মানদিপ সিং। ২০২২ যুব ওয়ানডে বিশ্বকাপে উগান্ডার বিপক্ষে অপরাজিত ১৬২ রানের ইনিংসে সমান ৮ ছক্কা মারেন রাজ বাওয়ার। এই দুজনকেই কাল ছাড়িয়ে গেলেন বৈভব।
এ ছাড়া ভারতের হয়ে এদিন ওয়ানডেতে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডও হয় এই বাঁ-হাতি ওপেনারের। তিনি ফিফটি পূর্ণ করেন মাত্র ২০ বলে। মাত্র ১৮ বলে ফিফটি নিয়ে যুব ওয়ানডেতে ভারতের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরিয়ান ঋষভ পান্ত। ২০১৬ যুব ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি মিরপুরে নেপালের বিপক্ষে ওই রেকর্ড গড়েন। সেটি তখন যুব ওয়ানডে ইতিহাসেরই দ্রুততম ফিফটি ছিল। পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্টিভ স্টলক ২০২৪ যুব ওয়ানডে বিশকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৩ বলে ফিফটি করে ভেঙে দেন সেই রেকর্ড।
বৈভব গতকাল অবশ্য একটি বিশ্বরেকর্ডের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন। তিন অঙ্কের ঘরে যেতে পারলে তিনি হয়ে যেতেন যুব ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম বয়সী সেঞ্চুরিয়ান। ২০১৩ সালে ১৪ বছর ২৪১ দিন বয়সে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যুব দলের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন শান্ত। যা এখনও বয়সভিত্তিক ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরির রেকর্ড। গতকাল ৮৬ রানে আউট হওয়া বৈভব সূর্যবংশীর বয়স ছিল ১৪ বছর ৯৭ দিন। এ ছাড়া ফরম্যাটটিতে ভারতের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ (১৫ বছর ৩৩৮ দিন) সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার রেকর্ডটি এখনও মোহাম্মদ সরফরাজের দখলে আছে।
ব্যাটিংয়ে আগ্রাসী এই ক্রিকেটার স্ট্রাইকরেটের হিসাবেও একটি রেকর্ড গড়েছেন। গতকাল তার স্ট্রাইকরেট ছিল ২৭৭.৪১। যা ভারতের হয়ে পঞ্চাশোর্ধ রান করা যুব ক্রিকেটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। পান্ত সর্বোচ্চ ৩২৫ স্ট্রাইকরেটে ৭৮ রান করেন ২০১৬ সালে। এখন পর্যন্ত যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বৈভব ৬ ম্যাচে ১৮৮.২৩ স্ট্রাইকরেটে ২৫৬ রান করেছেন। যেখানে তার ছক্কা ২২টি। ইংলিশ যুবাদের বিপক্ষে চলমান এই সিরিজের তিন ম্যাচেই হেসেছে তার ব্যাট। করেছেন যথাক্রমে ৪৮, ৪৫ ও ৮৬। ভারতও তিন ম্যাচ শেষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে।
ইউটি/এসএন